August 20, 2014

ফিলিস্তিনের জন্যে

আমার জীবনের সবচেয়ে অলৌকিক ঘটনাটা ঘটেছিলো আমার আব্বা সাংবাদিক আজিজুল হক বান্না'র মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে। আমি স্বপ্নে আমার আব্বার মৃত্যুদৃশ্য দেখলাম! তিনি মৃত্যুর আগে আমাকে বল্লেন 'বাবা, ফিলিস্তিনের ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা কইরো। পৃথিবীর শান্তি চাইলে ওই সমস্যাটার সমাধান আগে করতে হবে'
কেন এইরকম একটা স্বপ্ন দেখলাম তার ব্যাখ্যায় যেয়ে চাইছি না।কিন্তু আব্বা আসলেই তার এক সপ্তা পর মারা গেলেন এর পর আমার পৃথিবী অনেক অগোছালো হয়ে যায়।
স্বপ্নদৃশ্যের ব্যাখ্যায় যাবার দরকার নেই। আমার বাবা প্রবল ডানপন্থী মানুষ ছিলেন। দিনরাত পৃথিবীব্যাপী অসাম্য আর অন্যায়ের প্রতিকার ভাবতেন আর লিখতেন। সেই স্বপ্ন দেখবার ও আব্বার মৃত্যুর পর আমি মনোযোগ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাপ্রবাহ দেখি। আরব বসন্ত যে মূলত গুটিবসন্ত সেটা আব্বাই লিখে গেছেন মৃত্যুর ক'দিন আগে। অবাক হয়ে খেয়াল করলাম সেটা সত্যি। আমি এরপর সময় পেলেই মিশরের নির্বাচন, সিরিয়ায় গণহত্যা বা সুয়েজ খাল নিয়ে দর কষাকষির ব্যাপারগুলি পড়ি। আর সর্বশেষ ফিলিস্তিনের গাজায় ইতিহাসের অন্যতম নৃশংশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম। কি ভয়ানক! হামলার চেয়ে ভয়ানক হল নাকের গোড়ায় বসা আরব বিশ্ব এ  ব্যাপারে উদাসীন। ওদিকে পশ্চিমা বিশ্ব সাফাই গাইছে হামাসের বিরুদ্ধেই! মানে যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে। কি করা যায় বুঝতে পারছি না।
আমাদের আসলে আদৌ কিছু কি করার আছে?

এমন সময়ে হঠাত এক ফিলিস্তিনি কার্টুনিস্ট মোহাম্মদ সাবানেহ এর মেইল। সে ফিলিস্তিনের রামাল্লায় একটা মিউজিয়ামে এই হামলা বিরোধী একটা কার্টুন প্রদর্শনী করতে চাচ্ছে। আমি কার্টুন দিতে আগ্রহী কিনা। পরদিনই দুটি  কার্টুন পাঠিয়ে দিলাম। জানতে চাইলাম কবে কী। আর তার উত্তর এল  আজ। মাহমুদ দারভিশ মিউজিয়ামে অন্য অনেকের সাথে আমার কার্টুনও ওরা রেখেছে। এই কার্টুন কোন গোলা আটকাতে পারবে না জানি। কিন্তু কেন জানি মনে হল আব্বা আনন্দ নিয়ে আমার মাথায় হাত রেখে আলো ঝলমলে চোখে এই চিঠিটা দেখছেন।

No comments:

Post a Comment

হ্যাংওভার কাটিয়ে

একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...