July 10, 2014

কার্টুনের রান্নাঘর সিরিজঃ ডিম মানুষ

প্রথম আলো হাউজ থেকে বের হওয়া কিশোর আলো কি আ (নামটা শুনলেই এ তুনে কেয়া কিয়া টাইপ অনুভব হয়-যাই হোক) তে সিমু ভাইয়ের অনবরত চাহিদার প্রেক্ষিতে অবশেষে আমার 'ক্ষ' সিরিজটা শুরু করলাম, এই চান্স এ 'ক্ষ' হয়ে গেলে খারাপ কী?
লেখাটা তুলে দেই- মন্তব্য কাম্য।

কার্টুন শব্দটা শুনলেই একটা দারুণ চনমনে বোধ হয়। শুনলেই মনে হয় বেশ একটা মজার কিছু ঘটতে যাচ্ছে। একটা দারুণ কিছু, কিছু এডভেঞ্চার, কিছু রহস্য, কিছু ফান সব মিলে যেন কী একটা ব্যাপার ঘটে যায় একসাথে। কার্টুনের কতশত ধরন, কার্টুনের আছে কার্টুন ছবি (এনিমেশন), আছে কমিক্স, আছে স্ট্রিপ, আছে ক্যারিকেচার আর ডিজিটাল দুনিয়ায় তো এর ধরনের অভাবই নেই, একেকটা গেম ও তো আসলে একেকটা কার্টুন ছবি-ই। কার্টুনের এই বিরাট দুনিয়ায় আমরা আর পিছিয়ে থাকি কেন? কার্টুনের বিরাট যজ্ঞে কিভাবে তবে লগ ইন করা যায়? দেখা যাক। কার্টুন যাদের ভালো লাগে-বিশেষ করে যারা আঁকতে চায়-তাদের জন্যেই এই সিরিজ। কার্টুনের আসলে দুইটা অংশ। আঁকা আর লেখা বা আইডিয়া। মজার ব্যাপার হল আমরা আসলে খালি চোখে আঁকাটাই দেখি কিন্তু এর মূল মজাটা কিন্তু এর পেছনের আইডিইয়াটা কী সেটাই। আমরা এইখানে আগে আঁকা আঁকির পার্ট টা নিয়েই কথা বলব। আর শেষের দিকে গল্পের কথাও হবে। যেমন, কমিক্স কিভাবে আঁকা হয়, আইডিয়া কিভাবে আসে, গল্প কিভাবে বলে তার ওপর। আশা করি খুব একটা খারাপ হবে না ব্যাপারটা- 'কার্টুন' বলে কথা।

প্রথমে আমরা একেবারে বেসিক এ চলে যাই। কার্টুন এ সবচেয়ে বিপদ লাগে মানুষ আঁকতে। কোত্থেকে শুরম্ন করব, কিভাবে আগাবো এটা আসলেই বিপদের কাজ।এটা করার একটা সহজ পথ হল আগেই গোটা মানুষটা না এঁকে দুইটা গোল্লা আঁকা। মূলতঃ পুরো ফুটবলের মত গোল্লা না। অনেকটা ডিমের মত। আসলে এই দুইটা ডিম হল শরীরের দুইটা পার্ট। বুকের খাঁচা আর কোমর। আর এই দুই পার্ট একটা রাবারের মতও সূতো দিয়ে আটকানো থাকবে, যেটা আসলে মেরদণ্ড-। কথা না বড়িয়ে আমরা সরাসরি কাজে চলে যাই।


ভালো কথা ডিম দুইটা আমরা বোঝার জন্যে দুই রঙ দিয়েছি। আর দুইটা ডিম কিন্তু দুই ভাবে রাখা। কালো বৃত্ত গুলি বোঝাচ্ছে সেগুলির মাঝ বরাবর যদি কোন লাইন টানা হয় তার পথটা। এখানে লাল ডিমটা আসলে মানুষে বুকের খাঁচা। এই অংশটাই শরীরের মধ্যে সবচেয়ে বড়। আর নীচে নীল ডিম হল কোমর। এবারে তিন নাম্বার ছবিটায় দেখা যাচ্ছে এই দুইটাকে একটা কালো সূতো মতন কিছু দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। বাস্তবে এইটা আসলে মেরদণ্ড। বোঝার সুবিধার জন্যে পাশে ছোট করে উলটে ব্যাপারটা বোঝানো হল মেরদণ্ড অনেকটা রাবারের মত এই দুইটা অংশকে আটকে রাখে। মাথার খুলির গোড়া থেকে শুরু করে কোমরের শেষ পর্যন্ত এটা নামে। বাস! পুরো শরীরের এইটুক ভালো অত যদি আমরা বুঝি তবে বাকিটুকু জলবৎ তরলং। এইটুক ভালোমত বুঝে আমরা এই জোড়াডিমের কিম্ভূত বস্তুটা বিভিন্ন ভাবে আঁকার চেষ্টা করব। দেখা যাক সেটা কেমন হয়।

সোজা বাঁকা, উলটো, ডানে বামে মুচড়ে মোট কথা যতভাবে মাথায় আসে সেভাবে করে এটা আঁকা শুরু করতে হবে এখনই। আমরা যদি কার্টুন না এঁকে একেবারে রিয়েলস্টিক দ্য ভিঞ্চি স্টাইলেও আঁকতে চাই ত্তাহলেও কিন্তু বেসিক এটাই! সুতরাং এটা আরো যতভাবে মাথায় আসে এঁকে ফেলা যাক। তবে ব্যাপারটা অংক ক্লাসের মত- মানে কেন এই অংক করছি জানি না- টাইপ হবার আগেই এটা করে শেষে কী উপকার তা একটা চুরি করে দেখে নিতে পরের ড্রয়িংটা আড়চোখে দেখে নেই। 
 অর্থাৎ, যে ধরনের আঁকাই হোক না কেন, ডিটেইল বা সিম্পল- সবগুলি শরীর কিন্তু সেই ডিম দুইটার প্রথমে আঁকা একেবারে সিম্পল ভঙ্গীর ওপরেই ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। এখনই এসব দেখে মাথা গরম করার কিছু নেই। আশা করি আমরা এই সিরিজের শেষ নাগাদ এই ধরনের যে কোন ভঙ্গীর মানুষ আঁকতে শিখে যাব।


এবারে আমরা একটু ডিটেইল এ যাই। প্রথমে কিছু অস্ত্রপোচার করে নেই। ডিম দুটো (ধরে নিই সিদ্ধ ডিম :) চাক চাক করে কিছুটা কেটে নিই। মানে যেই দিক গুলি তাদের মুখোমুখি সেদিকে। তাতে করে ওপরের ছবিটার মাঝখানের মত একটা ব্যাপার ঘটবে। মানে মনে হবে দুইটা অংশই কিছুটা বাঁকা করা। পাঁজর ওপরের দিকে, কোমর নীচের দিকে। ব্যাপারটা আসলেই তাই। এবারে স্কন্ধকাটা ভুতটার একটা মাথা দেই। মাথা বলতে আসলে খালি খুলির ওপরের অংশটাই বলা হচ্ছে এখন। আসলে খালি মাথা আমরা পরে আরো ডিটেইলে দেখবো।

হুম। আর খুলির নীচের পার্টটা যদি বুঝতে চাই সেটা আসলে সহজ। বামে খেয়াল করম্নন। খুলির সাথে চোয়ালটা আসলে একটা স্ক্রু এর মত করে আটকে থাকে। কথা বলা বা হাঁ করার সময় খালি ওই পার্ট টাই নড়ে। কেউ যদি 'রোবটস' এনিমেশন টা দেখি তাহজলে দেখব ওখানে রডনি কপারবটম নামের মূল চরিত্রটা ঠিক আমাদের এই মিনিমাম ডিম মানুষের মতই


প্রথম পর্বের জন্যে আশা করি যথেষ্টই বলা হল। পরের পর্ব আসতে আসতে যদি এই সিদ্ধ ডিমগুলি মোটামুটি কড়া তেলে ভেজে ফেলতে পারি তবে অন্যান্য পর্বগুলি বেশ উপাদেয় হবে। ভালো কথা। চাইলে অন্যান্য সত্যিকারের ছবি বা আঁকা দেখে এখন তাদের ডিম গুলি কিভাবে কোনটার সাথে কোনটা আছে সেটা বের করে আঁকার চেষ্টা করলে এই পর্বের কাজটা আরো সরগড় হবে। আপাতত এখানেই থামি এবার।

1 comment:

  1. ধন্যবাদ মেহেদী ভাই। :) "কার্টুন আঁকিবার ক্ষ" এর আশায় থাকলাম... :)

    ReplyDelete

হ্যাংওভার কাটিয়ে

একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...