October 16, 2022

দৈনন্দিন

অক্টোবরের বিষন্ন বাতাস, কালচে গাঢ় হয়ে সন্ধ্যা নামছে। ঘণ ছাই চাদরের মত ধোঁয়া আর ধুলো মিলে একটা মতিভ্রম বুনে যাচ্ছে সামনে। পৃথিবীর দূষিততম শহরে উন্নয়ন চলছে। শৈশবে দেখা দূর পৃথিবীর অন্য সময়ের একটা যে ছবি আঁকা হত হলিউডি সিনেমায়, মানুষ সব বিষন্ন, মুখে মুখোশ। গ্যাস মাস্ক নিয়ে একদল জিন্দা লাশের মত চলছে- বর্তমান ঠিক যেন তাই। দূর পৃথিবী এখন সন্নিকটে। চামড়া থেকে ঘি মাখন উপচে পড়া দুই মেয়র এর মধ্যে মাঝে মাঝেই হুমকী দিয়ে যাচ্ছে- কারো বাসায় এডিস মশার লার্ভা পেলে দেখে নেবে। দক্ষিণের জন আবার হতদরিদ্র ফুটপাথের বিক্রেতাদের বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদে ব্যাস্ত।
এর মধ্যে বাসায় ফিরছি। পাঁচতারা হাসপাতালে মা (আমার শ্বাশুড়ি) জীবন সংকটে আই সি ইউ তে। সেই আগে দেখা সাই-ফাই সিনেমার মত বিভিন্ন কলকব্জাযোগে বেঁচে আছেন। ঠিক তার আগেরদিন আমরা একত্রে গুলশানের ব্যাম্বু শুট রেস্তোরায় খেলাম। তাঁর ছোট বোনের স্বামীর হৃদয়বিদারক বিয়োগের পরে বছর ঘুরে এই একত্র হওয়া। তার পর কী থেকে কী হল। হার্নিয়ার পেলে পুষে বড় করা সমস্যাটা এরকম হুট করে প্রাণঘাতী হয়ে গেল,। এখন ঝুঁজছেন ফুসফুসের সংকটে। ভেন্টিলেশন ছাড়া দম নেয়া যাচ্ছে না, পৃথিবীর দূষিততম শহরে এদ্দিন দম নিতে পেরেছেন এই তো বেশি। 

জীবন ক্ষণস্থায়ী- মানছি। কিন্তু সেটুকু সময়ে কিছু মানুষের অবহেলা আর দুরাচারে নিরীহ মানুষ যে অকালে চলে যায়, ভয়ানক কষ্ট পায় তা মানছি না। মাঝে মাঝে নিজেকে স্বার্থপর লাগে, এই সমস্যা নিয়ে কাজ করার মত একটা বিষয়ে পোড়াশোনা করে যেই বুঝেছি সেদিকে কাজ করার মানে নাই, এক জীবনে খুব বেশি কিছু হবে না, চলে এসেছই আরেকদিকে। ঠিক করেছি কী?
কে জানে।

গত রাতে মহাখালী ফ্লাইওভারে রাত সাড়ে এগারোটার সময় পার করতে করতে অনেককিছু মনে এলো। কত কী ফেলে এসেছি। বিশেষ করে আব্বা।
আব্বা ঠিক ওই আই সি ইউ তেই মারা গেছিলেন।  

No comments:

Post a Comment

চলছে ফরেন কমিকস