September 29, 2015
September 28, 2015
September 24, 2015
September 18, 2015
September 15, 2015
September 13, 2015
এনিমেশন, কী কেন ও কিভাবে?
এনিমেশন কী সেটা নিয়ে কথা বলতে গেলে সেটা হাস্যকর হয়ে যেতে পারে। গুগলের দুনিয়ায় যখন ঘরে ঘরে টিভি, হাতে হাতে ট্যাব আর সারি সারি এনিমেটেড মুভি, গেমস খেলছে সব 'স্মার্ট' ছেলেবুড়ো আর মেয়েরা তখন হঠাত উড়ে এসে জুরে বসে চশমার ডাঁট ঠিক করতে করতে এনিমেশন কী জিনিস সেটা নিয়ে গুরু গম্ভীর আলোচনা শুরু করতে গেলে কেউ 'খাবে' না। তারপরেও যেহেতু লেখাটি এনিমেশন নিয়ে সেহেতু বলে রাখা যাক যে মানুষের বানানো যে কোন ভিজুয়াল সেট এ (ড্রয়িং ই হতে হবে এমন না) যদি কোন মেশিন (মূলত কম্পিউটার) এর মাধ্যমে গতি যোগ করে তা দিয়ে একটা গল্প বলা হয় তবে সেটা এনিমেশন। আসলে এনিমেশন মানে যেটার মোশন আছে এমন কিছু। আমরা এখানে এনিমেশন বলতে কার্টুন এনিমেশন কেই বোঝাচ্ছি, আর সেই কার্টুন এখন আর টম এন্ড জেরিতে আটকে নেই। সেই গণ্ডি ছাড়িয়ে চলে গেছে আরো অনেক দূর। আজকালকার হলিউডি প্রায় সব মুভিতেই ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট আকারে যা ব্যবহার করা হয় তা কোন না কোন রকম এনিমশনই বটে। এবারে আমরা ব্যাপারটা আরেকটু ডিটেইলে বোঝার চেষ্টা করি-
(না বুঝলেও অবশ্য ক্ষতি নেই।)
আগের কথা
আমরা আজকের যেই এনিমেশন দেখি সেটার উৎপত্তি কিন্তু অনেক আগেই। যেই মূল ব্যকরণটা মেনে এই যাদুকরী জগতটা তৈরী করা হয় সেটা আসলে খুবই সরল। মানুষের চোখ একটা বস্তু তার সামনে থেকে সরিয়ে নেবার পরেও ০.০১ সেকন্ড দেখতে পায়। (অনেকেই হয়ত দর্শনানুভূতির স্থয়িত্বকাল শব্দটা অনেক কষ্টে বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে ক্লাস নাইন টেনে পড়ে থাকবেন। এটা সেই জিনিস।) এই ছোট্ট ব্যকরণ এর ওপরে দাঁড়িয়ে আছে এই যাদুর জগত। একেবারে আদিম এনিমেশনের কথা যদি জানতে চান তবে আমাদের চলে যেতে হবে গুহাচিত্রে। মিশরের প্যাপিরাসে পাওয়া বেশ কিছু হায়ারোগ্লিফিক আসলে আজকালকার এনিমেশন বা কমিক্স এর একেবারে প্রাথমিক রূপ। মানে সেখানে একটা ঘটনা দৃশ্যের পরে দৃশ্য এঁকে যাওয়া হয়েছে। যেমন নিচের ছবিটা মিশরের 'বেনি হাসান' এর এক সমাধিক্ষেত্রের দেয়ালে পাওয়া গেছে, দুইজন লোক কুস্তি লড়ছে। ব্যাস এ-ই। এবং এটা করা হয়েছে ৪০০০ বছর আগে! পর পর দেখে গেলে মনে হবে যেন চোখের সামনে ঘটনাটা সত্যি ঘটছে। তবে এ আর যাই হোক এখানে কোন মেশিনারিজ ব্যবহাার করা হয়নি। স্রেফ কিছু ড্রয়িং।
এ গেলো আগের দিকের কথা তবে আসলে যেটাকে আমরা এখন এনিমেশন বলি- অর্থাৎ মেশিন টেশিন দিয়ে যেটা করা হয় সেটার মূল উৎপত্তি ইউরোপ এ। লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির ষোড়শ শতকের একটা এনাটমি স্টাডির একটা স্কেচ থেকে দেখা যায় এ রকম ধাপে ধাপে আঁকা মানুষের শরীরের মুভমেন্ট। যেগুলি পর পর দেখলে মনে হবে অনেকটা এনিমেশনের ফ্রেম। এ ছাড়া ইউরোপে ও আমেরিকায় বিভিন্নভাবে এনিমেশনের প্রাথমিক ফর্মগুলি জন্ম নিচ্ছিলো তখন। যেমন ম্যাজিক ল্যন্ট্রার্ন (১৬৫০) The magic lantern, থুমাট্রপে (১৮২৪) Thaumatrope, ফেনাকিস্টোস্কোপ (১৮৩১) Phenakistoscope, জ্যুওট্রপ (১৮৩৪) Zoetrope ইত্যাদি নামের বেশ কিছু লাগসই প্রযুক্তি তখন আবিষ্কৃত হচ্ছিলো। ইংরেজি বানানটা এখানে দিয়ে দেয়ার কারণ যাতে করে আপনি চাইলে গুগল এ সার্চ করে আরো ডিটেইল জানতে পারেন। আপাতত জ্যুওট্রপ নামের যন্ত্রটার কথা বলা যাক। সেটা বললেই আসলে মূল ব্যকরণটা বোঝা যাবে। যন্ত্রটা দেখতে এরকম-
একটা গোল সিলিন্ডারে কিছু ছোট ছোট চির কাটা আছে। আর সিলিন্ডার বা পাত্রটার ভেতরের গায়ে সেঁটে দেয়া আছে একটা একটা মানুষের বিভিন্ন সময়ে দৌড়ের ছবি। এবারে কেউ যদি হাতে যন্ত্রটার দ- ধরে সেটা জোরে ঘুরিয়ে দেয় লাটিমের মত আর কোন একটা ফাঁকায় চোখ রাখে তবেই যাদু- দেখা যাবে লোকটা দৌড়াচ্ছে! কারণ একটা ছবি দেখে শেষ করতে না করতেই মানে সেটার রেশ থাকতে থাকতেই (সেই দর্শনানুভূতির স্থায়িত্বকাল ইত্যাদি) পরের ছবিটা চোখের সামনে চলে আসছে । তার ফলে মনে হচ্ছে সব একটানা চলছে আর তাতেই মনে লোকটা দৌড়াচ্ছে। যারা এই ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছেন না তাদেরকে আরো সহজ করে দেয়া যাক। আশা করি অনেকেই ছোটোবেলায় এই খেলাটা খেলেছেন/দেখেছেন। খাঁচার ভেতর পাখি।
একটা শক্ত বোর্ড কাগজের একপাশে একটা পাখি আরেক পাশে একটা খাঁচা আঁকা। দুটোই বরাবর সোজা করে আঁকা। এবারে সেই কাগজের দুই পাশে দুটো ফুটো করে তাতে সূতো বেঁধে পেঁচিয়ে দেয়া হল। তারপর ছাড়তেই সেটা এবারে তীব্র গতিতে এমন ভাবে ঘুরতে থাকবে যেন মনে হবে পাখিটা খাঁচার ভেতরে ঢুকে গেছে। চাইলে এখনই কেউ এটা করে দেখতে পারেন। এমনি আরেকটা মজার এনিমেশন আছে হাতে করার সেটার নাম ফ্লিপ বুক। অনেকে কোন মোটা বইয়ের কোণাতে ছোটো ছোট করে পর পর বিভিন্ন ভঙ্গি এঁকে এটা বানিয়ে থাকেন।
কে জানে পৃথিবী হয়ত আপনার অপেক্ষাতেই বসে!
(না বুঝলেও অবশ্য ক্ষতি নেই।)
আগের কথা
আমরা আজকের যেই এনিমেশন দেখি সেটার উৎপত্তি কিন্তু অনেক আগেই। যেই মূল ব্যকরণটা মেনে এই যাদুকরী জগতটা তৈরী করা হয় সেটা আসলে খুবই সরল। মানুষের চোখ একটা বস্তু তার সামনে থেকে সরিয়ে নেবার পরেও ০.০১ সেকন্ড দেখতে পায়। (অনেকেই হয়ত দর্শনানুভূতির স্থয়িত্বকাল শব্দটা অনেক কষ্টে বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে ক্লাস নাইন টেনে পড়ে থাকবেন। এটা সেই জিনিস।) এই ছোট্ট ব্যকরণ এর ওপরে দাঁড়িয়ে আছে এই যাদুর জগত। একেবারে আদিম এনিমেশনের কথা যদি জানতে চান তবে আমাদের চলে যেতে হবে গুহাচিত্রে। মিশরের প্যাপিরাসে পাওয়া বেশ কিছু হায়ারোগ্লিফিক আসলে আজকালকার এনিমেশন বা কমিক্স এর একেবারে প্রাথমিক রূপ। মানে সেখানে একটা ঘটনা দৃশ্যের পরে দৃশ্য এঁকে যাওয়া হয়েছে। যেমন নিচের ছবিটা মিশরের 'বেনি হাসান' এর এক সমাধিক্ষেত্রের দেয়ালে পাওয়া গেছে, দুইজন লোক কুস্তি লড়ছে। ব্যাস এ-ই। এবং এটা করা হয়েছে ৪০০০ বছর আগে! পর পর দেখে গেলে মনে হবে যেন চোখের সামনে ঘটনাটা সত্যি ঘটছে। তবে এ আর যাই হোক এখানে কোন মেশিনারিজ ব্যবহাার করা হয়নি। স্রেফ কিছু ড্রয়িং।
ছবিঃ ৪০০০ বছর আগের মিশরীয় দেয়ালচিত্র। কুস্তি লড়াই
আবার অন্যদিকে ইরানের 'শাহরে সুখতে' নামের জায়গাতে পাওয়া গেছে এই পাত্রটা। এটাকে বরং আরেক ডিগ্রি ওপরে ধরা যায়, কারণ পাত্রটা যদি চোখের সামনে নিয়ে ঘোরানো হয় তবে দেখা যাবে একটা পাহাড়ি ছাগল লাফ দিয়ে একটা গাছের পাতা থেকে কিছু ছিঁড়ে খাচ্ছে। তার একেকটা বিভিন্ন সময়ের পোজ এখানে পর পর আঁকা আছে। পাত্রটার ড্রয়িংটা খুলে ধরলে কেমন হবে সেটা দেখানো হয়েছে নিচের দ্বিতীয় ছবিতে খোলা রিল এর মত করে। (ঘটনাক্রমে ইরানে গিয়ে এই পাত্রটি দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার রীতিমত রোমহর্ষ অভিজ্ঞতা।) আর এই জিনিস ৫২০০ বছর আগের বানানো!
ছবিঃ ৫০০০ বছর আগে ইরানের শাহরে সুখতে নামের জায়গায় পাওয়া এনিমেটেড পাত্র’
এ গেলো আগের দিকের কথা তবে আসলে যেটাকে আমরা এখন এনিমেশন বলি- অর্থাৎ মেশিন টেশিন দিয়ে যেটা করা হয় সেটার মূল উৎপত্তি ইউরোপ এ। লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির ষোড়শ শতকের একটা এনাটমি স্টাডির একটা স্কেচ থেকে দেখা যায় এ রকম ধাপে ধাপে আঁকা মানুষের শরীরের মুভমেন্ট। যেগুলি পর পর দেখলে মনে হবে অনেকটা এনিমেশনের ফ্রেম। এ ছাড়া ইউরোপে ও আমেরিকায় বিভিন্নভাবে এনিমেশনের প্রাথমিক ফর্মগুলি জন্ম নিচ্ছিলো তখন। যেমন ম্যাজিক ল্যন্ট্রার্ন (১৬৫০) The magic lantern, থুমাট্রপে (১৮২৪) Thaumatrope, ফেনাকিস্টোস্কোপ (১৮৩১) Phenakistoscope, জ্যুওট্রপ (১৮৩৪) Zoetrope ইত্যাদি নামের বেশ কিছু লাগসই প্রযুক্তি তখন আবিষ্কৃত হচ্ছিলো। ইংরেজি বানানটা এখানে দিয়ে দেয়ার কারণ যাতে করে আপনি চাইলে গুগল এ সার্চ করে আরো ডিটেইল জানতে পারেন। আপাতত জ্যুওট্রপ নামের যন্ত্রটার কথা বলা যাক। সেটা বললেই আসলে মূল ব্যকরণটা বোঝা যাবে। যন্ত্রটা দেখতে এরকম-
ছবিঃ জ্যুওট্রপ, প্রাথমিক এনিমেশন যন্ত্র
একটা গোল সিলিন্ডারে কিছু ছোট ছোট চির কাটা আছে। আর সিলিন্ডার বা পাত্রটার ভেতরের গায়ে সেঁটে দেয়া আছে একটা একটা মানুষের বিভিন্ন সময়ে দৌড়ের ছবি। এবারে কেউ যদি হাতে যন্ত্রটার দ- ধরে সেটা জোরে ঘুরিয়ে দেয় লাটিমের মত আর কোন একটা ফাঁকায় চোখ রাখে তবেই যাদু- দেখা যাবে লোকটা দৌড়াচ্ছে! কারণ একটা ছবি দেখে শেষ করতে না করতেই মানে সেটার রেশ থাকতে থাকতেই (সেই দর্শনানুভূতির স্থায়িত্বকাল ইত্যাদি) পরের ছবিটা চোখের সামনে চলে আসছে । তার ফলে মনে হচ্ছে সব একটানা চলছে আর তাতেই মনে লোকটা দৌড়াচ্ছে। যারা এই ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছেন না তাদেরকে আরো সহজ করে দেয়া যাক। আশা করি অনেকেই ছোটোবেলায় এই খেলাটা খেলেছেন/দেখেছেন। খাঁচার ভেতর পাখি।
ছবিঃ পাখি ও খাঁচার এনিমেশন
একটা শক্ত বোর্ড কাগজের একপাশে একটা পাখি আরেক পাশে একটা খাঁচা আঁকা। দুটোই বরাবর সোজা করে আঁকা। এবারে সেই কাগজের দুই পাশে দুটো ফুটো করে তাতে সূতো বেঁধে পেঁচিয়ে দেয়া হল। তারপর ছাড়তেই সেটা এবারে তীব্র গতিতে এমন ভাবে ঘুরতে থাকবে যেন মনে হবে পাখিটা খাঁচার ভেতরে ঢুকে গেছে। চাইলে এখনই কেউ এটা করে দেখতে পারেন। এমনি আরেকটা মজার এনিমেশন আছে হাতে করার সেটার নাম ফ্লিপ বুক। অনেকে কোন মোটা বইয়ের কোণাতে ছোটো ছোট করে পর পর বিভিন্ন ভঙ্গি এঁকে এটা বানিয়ে থাকেন।
ছবিঃ ফ্লিপ বুক |
ছবিঃ উন্মাদের ওয়াক সাইকেল |
এত কিছু বলে নেয়ার একটাই কারণ, এনিমেশন কিভাবে কাজ করে সেটা বোঝা। আসলে সফটওয়ার বা কোন টুলস যে যাই ব্যবহার করুন না কেন মূল ব্যাপারটা এই যে একই বস্তুর পর পর কয়েকটা ভঙ্গী যদি দ্রুত পর পর দেখানো যায় তবে সেটাই এনিমেটেদ বলে মনে হয়। এই ব্যকরণটা মাথায় রেখে চাইলে নিজেও একটা নতুন পদ্ধতি বানাতে পারেন- তার আগে আমরা এই মূহুর্তে পৃথিবীতে কী চলছে আর আমরা কী করতে পারি সেটা দেখে আসি।
টু ডি আর থৃডি এনিমেশন
এনিমেশনের একন মোটা দাগে দুইটা ধারা আছে থৃডি আর টু ডি। টুডি এনিমেশন হল যেটাতে ছবিগুলি দ্বিমাত্রিক। আমরা যত আগের যুগের ক্লাসিক এনিমেশন দেখি তার মোটামুটি সবই এই টুডি এনিমেশন। ডিজনি লুনি টিউন্স প্রথমদিকের মাঙ্গা আনিমে সবই তাই। টুডি কিন্তু তুলনামূলক কষ্টসাধ্য এনিমেশন। কারণ এখানে সেই আদিম জ্যুট্রপের মত করে ফ্রেম বাই ফ্রেম হাতে এঁকে এঁকে কাজটা করতে হয়। এবং ক্লাসিক্যাল টুডি এনিমেশন- যাকে সেল এনিমেশন বলা হয়- তাতে প্রতি সেকেন্ডের একটা ভালো মুভমেন্ট এর জন্যে আর্টিস্ট এর আঁকতে হয় প্রায় ২৪ টা ড্রয়িং! সুতরাং বুঝতেই পারছেন ব্যাপারটা কতটা ধৈর্য্যের কাজ। তবে এখন বেশ কিছু কম্পিউটার সফটওয়ার এই কষ্ট অনেকটাই লাঘব করে দিয়েছে যেমন এডোব ফ্ল্যাশ বা টুনবুম এবং আরো কিছু ভেক্টর বেইজড সফটওয়ার এ মূল মডেলটা একবার বানালেই অনেকখানি কাজ কমে আসে। অন্যদিকে থৃডি তে কাজ করাটা বেশ মজার। যদি বুদ্ধি করে কিছুটা সহজ মডেল করা যায় আর ভালো কাজ জানা থাকে তবে একবার থৃডি মডেল বানিয়ে নেয়া মানে কোন ক্যারেক্টারের একটা পুতুল বানিয়ে নেবার মতই। তখন তাকে দিয়ে আপনি যা ইচ্ছা তাই করাতে পারবেন। সম্প্রতি এ দেশেও বেশ জনপ্রিয় হওয়া কার্টুন সিরিজ মোটু পাতলু কিন্তু এমনই একটি বেসিক থৃডি এনিমেশন। থৃডি এনিমেশন করারও অনেক সফটওয়ার আছে, সবচেয়ে জনপ্রিয় থৃডি ম্যাক্স আর মায়া। আর থৃডি মডেলিং এর জন্যে হালে জি ব্রাশ, মাডবক্স ইত্যাদি বেশ নাম করেছে। এখানে একটা ভুল ধারনা ভেঙ্গে দেবার সময় এসেছে। আসলে এই সফটওয়ায়র গুলি একেকটা কাজের টুল ছাড়া আর কছুই না। সফটওয়ার আপয়ার এনিমশন কওে দেবে না। গল্পও লিখে দেবে না। তাই সফটওয়ার এ একটা বস্তু নাড়াতে পারলেই আপনি এনিমেটর না। এনিমটর বা এনিমেশন স্টোরি টেলিং করতে হলে সবার আগে আপনাকে সেই হাতে কলমে আদিম পেন্সিল আর কাগজেই ফেরত যেতে হবে। বেসিক ড্রয়িং আর ক্যারেক্টার ডিজাইন যদি আপনি হাতে কলমে করতে না পারেন তবে অরিজিন্যাল কাজ করাটা আসলেই দুষ্কর। এখন কথা হল আপনি সব মেনে নিয়ে আসলেই এনিমশন শিখতে ও করতে চাচ্ছেন তাহলে কী উপায়? আমাদের দেশে এনিমেশন এর বেশ কিছু ফার্ম আছে, যেমন Dreamer Donkey, Ogniroth চাইলে তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যেতে পারে। আর নইলে একেবারে ঘরে বসেও শিখে নিতে পারেন অনলাইন ক্লাস করে। আজকাল ইউটিউবএ যেই পরিমাণ রিসোর্স পাবেন তা দিয়ে ঘওে বসে এনিমশনে ডক্টরেট করে ফেলা যায়। খালি লিখুন How
To animate/ Learning animation. তবে সে ক্ষেত্রে অনলাইনে এত কিছু পাবেন যে খেই হারিয়ে ফেলতে হবে। তার চেয়ে আরো নির্দিষ্ট করে লেখা ভাল। যেমন যদি টুডি শিখতে চান তবে টুডি এনিমেশন, থৃডি শিখলে থৃডি। এবং কোন সফটয়ার এ শিখবেন সেটাও বলে দিলেন। অন পেমেন্ট এডভান্স কোর্স যেমন আছে তেমনি আছে বেশ কিছু ফৃ টিউটরিয়াল। চাইলে একেবারে বেসিকের জন্যে দেখতে পারেন Lynda বা cgmasteracademy.com । সুতরাং আগ্রহীরা আর কোন অজুহাত দিতে পারছেন না। বাংলাদেশেই এখন বিশ্বমানের এনিমেশন করা সম্ভব। ইউনিসেফ এর মীনা সিরিজের শেষ সবগুলি এনিমেশন করা হয়েছে এই দেশেই! তাই যদি আইডিয়া থাকে আর থাকে আগ্রহ তবে এখনই উপযুক্ত সময় এই পেশায় আসার। পেশা হিসেবে এটা কেমন? নির্ভও কওে আপনি কতটা ভাল এ ব্যাপারে। যদি একেবাওে একা একাও ঘওে বসে শেখেন আর টুকটাক কাজ করেন ইল্যান্স বা ওডেস্ক এরম ত আউটসোর্সিন এর তবে এই দেশের আটটা পাঁচটা কেরানী চাকরির যে কোণটার চেয়ে খারাপ ইঙ্কাম আপনার হবে না এটুকু বলা যায়। তবে তার আগে বাড়াতে হবে নিজের দক্ষতা, দৈর্য্য আর কজের প্রতি বিশ্বস্ততা। বিজাতীয় কার্টুনের প্রভাবে আমাদেও পরের প্রজন্ম ভিন্ন সংস্কৃতি মনের মধ্যে গেঁথে বড় হচ্ছে। তার একটা বিকল্প বানানোও একটা বড় দেশপ্রেমমূলক কাজ। সেই মাঠও প্রায় ফাঁকা বললেই চলে। সুতরাং আর দেরী করার কিছু নেই, এই মূহুর্ত থেকে শুরু করে দিন।
কে জানে পৃথিবী হয়ত আপনার অপেক্ষাতেই বসে!
September 12, 2015
মাউস এ আঁকা
আঁকান্তিস গ্রুপ এ একজন পোস্ট দিল সে মাউস এ কিভাবে আঁকবে সেটা বুঝতে পারছে না। আসলে মাউস আঁকার কোন জিনিস না। যেটা করা যায় সেটা হল হাতে এঁকে (পেন্সিল কলম) স্ক্যান করে বা ছবি তুলে সেটা মাউস এ কালার করা। দুনিয়ার প্রথমদিকের সব ডিজিটাল ড্রয়িং মোটামুটী এভাবেই করা হত। তাও তাকে কিছুটা দেখিয়ে দেয়া যায় কি না ভেবে এই কুইক টিউটোরিয়াল
তার কাজটার ওপর পেন টুল দিয়ে পাথ করে একটা সিলেকশন করে সেটা ফিল করলাম। অন্য লেয়ার এ করে সেটা মাল্টিপ্লাই মোড এ নিয়েছি যাতে নীচের রাফ ড্রয়িংটা দেখা যায়- এই রাফ ড্রয়িংটা অন্তত হতে কলমে করাই ভাল। |
যে কোন কালার ফিল (Alt+backspace) করলাম |
মাউস এ আঁকা (জানটা শেষ) |
September 10, 2015
September 08, 2015
Heroweek: AKANTIS
আঁকান্তিস এ চলছে Heroweek, যে যার ছোটোবেলার হিরো আঁকবে।
আমার ছোটবেলার হিরো টারজান (রেফারেন্স থেকে অলমোস্ট ট্রেস করে আঁকা) - ইত্তেফাক এর থার্ড পেইজ এ টারজানের স্টৃপ বের হত। দেখে দেখে ইকোনো ডিএক্স দিয়ে সেটা নিউজপৃন্ট এর প্যাড এ প্রায় প্রতিদিন আঁকতাম। সেই থেকেই ড্রয়িং করার আগ্রহ শুরু। আমার জীবনের দেখা অন্যতম গ্রেট এই স্ট্রিপ এর আঁকিয়ে রাসেল জর্জ ম্যানিং (রাস ম্যানিং) ইদানীং যতই ঘাঁটছি ততই বুঝতে পারছি কি অসাধারণ আঁকিয়ে ছিলেন তিনি। একমাত্র ফ্র্যাংক ফ্রাজেত্তার আঁকাকেই এর ধারে কাছে বিবেচনা করা যায়। আগ্রহীরা ঘুরে আসুন তাঁর আর্কাইভ http://www.erbzine.com/mag8/0830.html
( আমার ছোটবেলার প্রথম হিরো আসলে রাস ম্যানিং।)
( আমার ছোটবেলার প্রথম হিরো আসলে রাস ম্যানিং।)
September 07, 2015
হেল বিজি
কাজ করি
আজকের কাজ তালিকা
১. কোরবানী ঈদ ইলাস্ট্রেশন ফর অনন্যা ঈদ ম্যাগাজিন (আজ সকালে শেষ করলাম )
২. দাদু-নাদু এনিমেশন এনভায়রন্মেন্ট ও ক্যারেক্টার ডিজাইন (চলবে এই সপ্তাহে পুরাটা)
৩. সি কে জাকি কমিক্স এর শংখলা সিরিজের প্রথমটার ডায়ালগ (চলবে)
৪. একটা চিকেন ক্যারেক্টার ডিজাইন উইথ ইউনিভার্স (প্রথম ধাপ শেষ)
৫. টই টই এর বই টই (রোমেন ভাই যে কোন দিন মাইর দিতে পারে, পুরাটা এঁকে একবার হারাইসি) (চলবে)
৬. একটা লোগো (শেষ, একটু এডিট)
৭. গ্রুপ ক্যারিকেচার (শেষ)
৮. কাপল ক্যারিকেচার (শেষ)
৯. নিউ এইজ এ পলিটিক্যাল কার্টুন (এখনো জানি না কী আঁকবো)
১০. প্রতি রাত এ রুহান রুহান ৩ এর এক পৃষ্ঠা ইংক (এসে করব)
আজকের কাজ তালিকা
১. কোরবানী ঈদ ইলাস্ট্রেশন ফর অনন্যা ঈদ ম্যাগাজিন (আজ সকালে শেষ করলাম )
২. দাদু-নাদু এনিমেশন এনভায়রন্মেন্ট ও ক্যারেক্টার ডিজাইন (চলবে এই সপ্তাহে পুরাটা)
৩. সি কে জাকি কমিক্স এর শংখলা সিরিজের প্রথমটার ডায়ালগ (চলবে)
৪. একটা চিকেন ক্যারেক্টার ডিজাইন উইথ ইউনিভার্স (প্রথম ধাপ শেষ)
৫. টই টই এর বই টই (রোমেন ভাই যে কোন দিন মাইর দিতে পারে, পুরাটা এঁকে একবার হারাইসি) (চলবে)
৬. একটা লোগো (শেষ, একটু এডিট)
৭. গ্রুপ ক্যারিকেচার (শেষ)
৮. কাপল ক্যারিকেচার (শেষ)
৯. নিউ এইজ এ পলিটিক্যাল কার্টুন (এখনো জানি না কী আঁকবো)
১০. প্রতি রাত এ রুহান রুহান ৩ এর এক পৃষ্ঠা ইংক (এসে করব)
গ্রুপ ড্রাফট |
রুহান রুহান ০৩ |
অনন্যা ঈদ ইস্যু- হাফ ডান |
রিজেক্টেড |
রিজেক্টেড |
এডিট চলছে |
রুহান রুহান ৩ এর একটা সাইকো ক্যারেক্টার |
September 02, 2015
শর্টকাট এ এনভায়রনমেন্ট পেইন্ট
আমি আসলে এই জিনিস পারি না, তাই সেটা সহজে করার একটা টেকনিক বের করেছি। এটাই একমাত্র উপায় না নিশ্চই, এবং বছর পাঁচেক পরেও যে আমি এভাবে আঁকব তার কোন নিশ্চয়তা নেই, তাও টেকনিকটা এখানে তুলে রাখা যাক, কারো কাজে লাগতে পারে।
প্রথমে একটা হালকা রঙ পুরো ক্যানভাসে ফিল মারা হ্ল।
এবারে সবচেয়ে ফাঁকির ধাপ, কয়েক দিকে বড় বড় কিছু ফর্ম এঁকে 'আটকানো হল' কম্পোজিশন।
এটা কিভাবে কোনদিকে দেব সেটা বুঝতে হলে কিছু ভাল কনসেপ্ট আর্ট দেখে
আগে এই বড় ফর্মগুলি বের করলে ভালো। বেশিরভাগ এনভায়রনমেন্ট এ দুই কোণা দিয়ে
কিছু এমন আন্তাজমারি জিনিস থাকে। ভাঙ্গা দালান, পাহাড়, গাছ ইত্যাদি। আসলে এটা দিয়েই মূল আঁকার কাজ
কমায়ে আনা যায়, এই পার্ট টা আমি খুব এনজয় করি। বিগ ফর্ম চাংক কই হবে সেটা ভালভাবে প্লেস করলেই কাজ
হাতে চলে আসে নীচে কিছু উদাহরণ দেই
খুব একটা সুবিধার হল না যদিও তবে বোঝানোর চেষ্টা করা হল যে আসলে অনেক ডিটেইল যেই
পার্টগুলি আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয় সেগুলি আসলে প্রথমের সেই বড় কিছু ফর্ম।
এবারে মাঝামাঝি একটা টোন দিলাম, এটাকে বলা যাক মিডগ্রাউন্ড, পিছনে ব্যাকগ্রাউন্ড
সামনে ফোরগ্রাউন্ড, মাঝে মিডগ্রাউন্ড
মিডগ্রাউন্ড এ কিছু মানুষ টাইপ জিনিস বসালাম। এনভায়রন্মেন্ট এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ব্যাপার হল হিউম্যান স্কেল, মানে যা আঁকছি সেটা মানুষের তুলনায় কত বড় সেটা বোঝানো জরুরি। সামনে বড় করে সাবজেক্ট আঁকা থাকলেও আমার মতে পেছনের দিকে কিছু ছোট করে মানুষ এঁকে স্কেল পার্স্পেক্টিভটা বোঝানো দরকার
একেবারে পেছনে কিছু সেকেন্ডারি ফর্ম। এই পার্ট টা বোঝা জরুরি। কারণ এইগুলি মূল ঝামেলাটা পাকায়।
পেইন্টিং দেখলে মনে হয়, অরে বাপ- কি ডিটেইল। আসলে এই পিছনের ফর্ম গুলির ভ্যালু হহয় লো, আর ডিটেইল আরো কম।
কিন্তু এটা একটা ভিজ্যুয়াল চালাকি তৈরী করে। মনে হয় না জানি কত ডিটেইল। এই পার্ট টায় তাই খুব বেশী
সময় না দিয়ে কিছু গ্রেডিয়েন্ট টেক্সচার মেরে একটা এসেন্স দিয়ে ছেড়ে দেয়াই ভাল।
আমার মতে সব টেকনিক ছাপিয়ে যে কোন আর্ট ওয়ার্কের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট- ছবি দিয়ে একটা স্টোরি বলা।
সামনের পাথর (বা যাই হোক সেটা) এর ওপর একজন মানুষের দুই পা দেয়া হল। হাতে তরবারী। অলরেডি কিন্তু
দর্শকদের মধ্যে ঘটনাটা কী জানার আগ্রহ তৈরী হয়ে গেলো। সামনে যারা আসছে তারা কারা? এই লোকটা কে?
এখন কি যুদ্ধ শুরু হবে? নাকি এরা একই দলের? ড্রয়িং যতই ভাল হোক সেটা
একটা স্টোরি বলার চেষ্টা না করলে আসলে তার গুরুত্ব অনেক কমে যায়।
এবারে কিছু র্যানডম গ্রেডিয়েন্ট (খেয়াল করুন পেছনে কিন্তু এমনি কিছু কানেক্টিং
ডালপালা আঁকা হয়েছে জামানোর জন্যে)
এবারে ডিজিটাল মিডিয়ার সুবিধা নিলাম, কালার পাল্টে নিলাম
(Ctrl+U চাপুন আর স্লাইডার ডান বাম করে বুঝে নিন) সাথে কিছু পাথর টাইপ টেক্সচার
আমার একগাদা গাছের ব্রাশ নামানো আছে গুগল থেকে, সেটা দিয়ে কয়েকটা ক্যাকটাস বসিয়ে দিলাম।
ব্যস!
ট্র্যাডিশনালিও কাজগুলি এভাবেই করে, চাইলে JOHN NAVAREZ এর কিছু পেন্সিল এ করা এনভায়রনমেন্ট থাম্বনেইল দেখতে পারেন।
Subscribe to:
Posts (Atom)
হ্যাংওভার কাটিয়ে
একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...
-
আইডিয়া পাওয়া বা ক্রিয়েটিভ কাজ ইত্যাদিকে এখনো আমাদের সমাজে একটা অলৌকিক প্রতিভা হিসেবে ভাবা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সত্যও বটে। ত...
-
দীর্ঘ দশ মাস পর ২০১৮ সালের বিজ্ঞান বিভাগের নবম-দশম শ্রেণির ৫ টা (গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান) ও আর্টস ও কমার্স বি...
-
এইবার আমরা হুইলের আসল কাজটা দেখি। মানে রঙ করার সময় এটা আসলে কি কাজে লাগে। একটা ছবি রঙ করার সময় আসলে মূল যে ব্যপারটা মাথায় আগে আনতে হবে সেটা ...