আমি কালার হুইল কখনই বুঝতাম না ( তার মানে এখন যে বুঝি তাও না-Disclaimer 1)। যতবারই আস্তিন গুটিয়ে বসেছি-হুঁহুঁ বাবা, এইবার বুঝেই ছাড়ব- ততবারই একটা সময়ে এসে তালগোল পাকিয়ে যেত। প্রাইমারি কালার ক্যান ক্যাট ক্যাট করে, টারশিয়ারি কালার কেন ম্যাদ ম্যদা- ইত্যাদি না বুঝেই বছরের পর বছর রঙ করে গেছি। তার ফলে কখনই রঙ করাটা হাতে আসে নাই (তার মানে এখন যে আসে তাও না-Disclaimer 2) । অনেক মন মিশায়ে রঙ করার পরেও প্রকাশক বলতেন- আরিট্টু 'উজ্জ্বল' করা যায় না? সম্পাদক বলেন- 'এইরম মরা কালার ক্যান?' আমিও আসলে সেটা টের পেতাম। এবং অনেক ভেবে চিনতে আবারো সেই কালার হুইল নিয়ে বসতাম, কিন্তু সত্যি বলতে থিওরির ভীড়ে খালি ডুবেই যেতাম, বুঝতাম না (আবার Disclaimer 1 হবে)। যাই হোক। অবশেষে ব্যপারটা বোঝা শুরু করি সব্যদা (সব্যসাচী মিস্ত্রী) দ্যা গ্রেইট এর কাছে। গ্রাফার CONCEPT ART কর্মশালায় সব্যদা আধা ঘন্টার মধ্যে ব্যাপারটা বুঝায়ে হাত নেড়ে বল্লেন-'শিইম্পল খুব শিম্পল'- আসলেও ব্যপারটা শিম্পলই। অন্ততঃ এই মুহূর্তে আমি যেভাবে বুঝি। তো এইবেলা 'শিম্পলি' সেটা সবার সাথে ভাগ করে নেয়া যাক।
প্রথমে মৌলিক তিনটা রং-লাল, নীল, হলুদ। ইংরেজীতে Cyan, Magenta, Yellow মানে কি না CMYK এর C M আর Y. k বা BLACK * আসলে কোন রঙ না- এটা আসলে অন্ধকার বা আলোর অনুপস্থিতি। এই CMY রঙ তিনটাকে বলা হয় মৌলিক রঙ বা Primary Color
এবারে আমরা যদি পাশাপাশি দুটো কালার মেশানো শুরু করি- অর্থাৎ লাল-হলুদ, লাল-নীল, নীল-হলুদ, তবে আমরা আরো তিনটা নতুন রঙ পাব। এই তিনটা যথাক্রমে কমলা, বেগুনী আর সবুজ। যেহেতু এদেরকে প্রাইমারি বা মৌলিক রঙ মিশিয়ে পেতে হয়েছে তাই এদের নাম সেকেন্ডারি রঙ
একইভাবে আমরা যদি আবার পাশাপাশি দুট করে রঙ মিশিয়ে নতুন আরো রঙ বানাতে থাকি তবে সেটা হবে এইরকম- এবং এদের বলা যায় টারশিয়ারি রঙ (কেউ কি সেকেন্ডারি, আর টারশিয়ারির ভাল বাংলা জানেন?)
একইভাবে ব্যপারটা উপর্যুপরি করে গেলে তা অনেকটা এমন রঙধনুর রুপ নেবে, আর এটাই আসলে কালার হুইল। বলা হয় এখানে প্রায় ১৬ বিলিয়ন রঙ পাওয়া সম্ভব। (এখানে একটা ব্যপার মনে রাখা ভাল- এই বৃত্তের রঙ্গগুলো একেবারে খাঁটি রং, একে বলে HUE। এর সাথে সাদা আর কালো মিশিয়ে এবার অন্যান্য 'শেড' তৈরি করা হবে)
আর সেই ১৬ বিলিয়ন রঙ পেতে হলে পরের ধাপটা বুঝতে হবে।
TINT SHADE TONE
মনে করুন এই রঙের বৃত্তের ঠিক মাঝখানে রাখা হল কালো কালি। আর তার চারিদিকে রাখা হল সাদা রঙ। এবারে ক্রমান্বয়ে প্রতিটা রঙ যদি দু'পাশে ছড়িয়ে দেয়া হয় অর্থাৎ ভিতরের দিকে যত ছড়ানো হবে তত এতে কালো কালি মিশতে থাকবে আর চারিদিকে যত ছড়ানো হবে তত মিশবে সাদা রঙ। তাহলে ব্যাপারটা অনেকটা এমন দাঁড়াবে।
খেয়াল করুন এবার একই রঙের (HUE) সাথে শুধু সাদা আর কালো মিশিয়ে অসংখ্য রঙ তৈরি হচ্ছে। এমন করে যত কালো মেশানো হবে তত বলা হবে এর TONE বাড়ছে, যত সাদা মিলবে তত বলা যাবে রঙ TINT এর দিকে যাচ্ছে। আর ধুসর রঙ মিশানো হলে সেটা যেদিকে যাবে তার নাম SHADE. নিচে ব্যাপারটা সহজে বুঝবার চেষ্টা করা যাক।
এই কালার হুইল যে কোন মাধ্যমের জন্য সত্য। আপনি জল রঙ তেল রঙ পোস্টার এক্রিলিক যাই করেন কথা একই। এটা রঙের একেবারে প্রাথমিক ব্যকরণ।
এবারে ডিজিটাল আর্টিস্টদের মধ্যে যারা ফটোশপএ রঙ করেন তাদের জন্যে কিছু কথা। এখানে আপনি কিছু অদ্ভুত ব্যাপার দেখবেন যেমন- এখানের হুইলটা লম্বা একটা ফিতার মত (আমি জানি না কেন)আমি এখানে পাশে সেটা গোল করে এঁকে দেখালাম। আর এখানে আপনি TINT SHADE TONE এর একটা চারকোণা বাক্স পাবেন(COREL groupএর সফটোয়্যার এ এটা একটা ত্রিভূজাকারে থাকে সেটা বোঝা আরো সহজ)। যার ওপরের ডান কোণায় HUE বা সবথেকে উজ্জ্বল, ক্যাটক্যাটা, ব্রাইট বা খাঁটি রঙ। বামের কোণাকুণি গেলে সাদা মিশতে থাকবে অর্থাৎ TINT . বামের নিচের কোণায় যেতে থাকলে ধুসর রঙ মিশতে থাকবে- SHADE আর ডান দিকের নিচের কোণায় মিশবে কালো, মানে -TONE
খবরের কাগজে যারা কাজ করেন, অর্থাৎ নিউজপ্রিন্ট কাগজে যাদের আঁকা ছাপা হয় তাদের জন্যে ছোট্ট একটা থাম্ব রুল- এই ফটোশপ বাক্সটাকে চারভাগে ভাগ করলে বাম দিকের ওপরের আর ডান দিকের নিচের বাক্স থেকে রঙ করাই ভালো। মাঝে মাঝে ডান দিকের ওপরেরটা ব্যবহার করতে পারেন। আমাদের দেশী নিউজপ্রিন্ট এর ছাপায় এটা ভাল ফল দেয়।
(পরের পর্বে কালার হারমোনি নিয়ে বলা হবে-ততক্ষণ আমাদের সাথেই থাকুন)
________________________________
*BLACK কে K দিয়ে লেখা হয় দুটো কারণে ১. B দিয়ে BLUE ও হতে পারে ২. প্রেস এ চার রঙের প্লেট মেলানোর সময় কালো প্লেট টাকে KEY registration কালার ধরা হয়- এজন্যে K
প্রথমে মৌলিক তিনটা রং-লাল, নীল, হলুদ। ইংরেজীতে Cyan, Magenta, Yellow মানে কি না CMYK এর C M আর Y. k বা BLACK * আসলে কোন রঙ না- এটা আসলে অন্ধকার বা আলোর অনুপস্থিতি। এই CMY রঙ তিনটাকে বলা হয় মৌলিক রঙ বা Primary Color
এবারে আমরা যদি পাশাপাশি দুটো কালার মেশানো শুরু করি- অর্থাৎ লাল-হলুদ, লাল-নীল, নীল-হলুদ, তবে আমরা আরো তিনটা নতুন রঙ পাব। এই তিনটা যথাক্রমে কমলা, বেগুনী আর সবুজ। যেহেতু এদেরকে প্রাইমারি বা মৌলিক রঙ মিশিয়ে পেতে হয়েছে তাই এদের নাম সেকেন্ডারি রঙ
একইভাবে আমরা যদি আবার পাশাপাশি দুট করে রঙ মিশিয়ে নতুন আরো রঙ বানাতে থাকি তবে সেটা হবে এইরকম- এবং এদের বলা যায় টারশিয়ারি রঙ (কেউ কি সেকেন্ডারি, আর টারশিয়ারির ভাল বাংলা জানেন?)
একইভাবে ব্যপারটা উপর্যুপরি করে গেলে তা অনেকটা এমন রঙধনুর রুপ নেবে, আর এটাই আসলে কালার হুইল। বলা হয় এখানে প্রায় ১৬ বিলিয়ন রঙ পাওয়া সম্ভব। (এখানে একটা ব্যপার মনে রাখা ভাল- এই বৃত্তের রঙ্গগুলো একেবারে খাঁটি রং, একে বলে HUE। এর সাথে সাদা আর কালো মিশিয়ে এবার অন্যান্য 'শেড' তৈরি করা হবে)
আর সেই ১৬ বিলিয়ন রঙ পেতে হলে পরের ধাপটা বুঝতে হবে।
TINT SHADE TONE
মনে করুন এই রঙের বৃত্তের ঠিক মাঝখানে রাখা হল কালো কালি। আর তার চারিদিকে রাখা হল সাদা রঙ। এবারে ক্রমান্বয়ে প্রতিটা রঙ যদি দু'পাশে ছড়িয়ে দেয়া হয় অর্থাৎ ভিতরের দিকে যত ছড়ানো হবে তত এতে কালো কালি মিশতে থাকবে আর চারিদিকে যত ছড়ানো হবে তত মিশবে সাদা রঙ। তাহলে ব্যাপারটা অনেকটা এমন দাঁড়াবে।
খেয়াল করুন এবার একই রঙের (HUE) সাথে শুধু সাদা আর কালো মিশিয়ে অসংখ্য রঙ তৈরি হচ্ছে। এমন করে যত কালো মেশানো হবে তত বলা হবে এর TONE বাড়ছে, যত সাদা মিলবে তত বলা যাবে রঙ TINT এর দিকে যাচ্ছে। আর ধুসর রঙ মিশানো হলে সেটা যেদিকে যাবে তার নাম SHADE. নিচে ব্যাপারটা সহজে বুঝবার চেষ্টা করা যাক।
এই কালার হুইল যে কোন মাধ্যমের জন্য সত্য। আপনি জল রঙ তেল রঙ পোস্টার এক্রিলিক যাই করেন কথা একই। এটা রঙের একেবারে প্রাথমিক ব্যকরণ।
এবারে ডিজিটাল আর্টিস্টদের মধ্যে যারা ফটোশপএ রঙ করেন তাদের জন্যে কিছু কথা। এখানে আপনি কিছু অদ্ভুত ব্যাপার দেখবেন যেমন- এখানের হুইলটা লম্বা একটা ফিতার মত (আমি জানি না কেন)আমি এখানে পাশে সেটা গোল করে এঁকে দেখালাম। আর এখানে আপনি TINT SHADE TONE এর একটা চারকোণা বাক্স পাবেন(COREL groupএর সফটোয়্যার এ এটা একটা ত্রিভূজাকারে থাকে সেটা বোঝা আরো সহজ)। যার ওপরের ডান কোণায় HUE বা সবথেকে উজ্জ্বল, ক্যাটক্যাটা, ব্রাইট বা খাঁটি রঙ। বামের কোণাকুণি গেলে সাদা মিশতে থাকবে অর্থাৎ TINT . বামের নিচের কোণায় যেতে থাকলে ধুসর রঙ মিশতে থাকবে- SHADE আর ডান দিকের নিচের কোণায় মিশবে কালো, মানে -TONE
খবরের কাগজে যারা কাজ করেন, অর্থাৎ নিউজপ্রিন্ট কাগজে যাদের আঁকা ছাপা হয় তাদের জন্যে ছোট্ট একটা থাম্ব রুল- এই ফটোশপ বাক্সটাকে চারভাগে ভাগ করলে বাম দিকের ওপরের আর ডান দিকের নিচের বাক্স থেকে রঙ করাই ভালো। মাঝে মাঝে ডান দিকের ওপরেরটা ব্যবহার করতে পারেন। আমাদের দেশী নিউজপ্রিন্ট এর ছাপায় এটা ভাল ফল দেয়।
(পরের পর্বে কালার হারমোনি নিয়ে বলা হবে-ততক্ষণ আমাদের সাথেই থাকুন)
________________________________
*BLACK কে K দিয়ে লেখা হয় দুটো কারণে ১. B দিয়ে BLUE ও হতে পারে ২. প্রেস এ চার রঙের প্লেট মেলানোর সময় কালো প্লেট টাকে KEY registration কালার ধরা হয়- এজন্যে K
vai...ami to jantam K=kent...jar mane tao black..
ReplyDeleteভুল জানতেন, এই নামে কোথাও কিছু পাই নি- আবার এতক্ষণ গুগল করলাম। যদি রেফারেন্স পান তো জানাবেন
ReplyDeletehttp://encyclopedia2.thefreedictionary.com/CMYK
http://www.ledet.com/margulis/2007HTM/ACT06-K_stands_for_what.htm
ওপরের লিংকদুটোয় KEY আর blacK পাবেন। :) ভাল থাকবেন
অনেক খেটেখুটে পোস্টটা তৈরির জন্য ধন্যবাদ। এবার বিবাহ জনীত আরেকটি পোস্ট দিন। :P ;)
ReplyDeletemehedi vai, secondary means_ ditio sreni, r tertiary means_ tritio sreni
ReplyDeletemehedi vai
ReplyDeletesecondary color er bangla hochche ditio srenir color, and tertiary color hochche tritio srenir color. :)
thanks apnar ei post er jonno. onek helpful
মেহেদি, তুমি ঠিক।
ReplyDeleteমেহেদি, কি মানে কি, কারণ চার-রঙা প্রিন্টে কালো প্লেটটাই কি (প্রধান) প্লেট কিংবা আর সব প্লেট কি (কালো) প্লেটের সাথে মেলানো হয় (keyed or aligned)।
ReplyDeleteThanX! Akkas vai!!
ReplyDelete@visualIllustrator :D (এটার ভাল বাংলা আসলেই নাই, অভিধানে বলা হচ্ছে- আনুষাঙ্গিক- কিন্তু আনুষাঙ্গিক তো আরো অনেক কিছুই হতে পারে- 'উপজাত'-ও টা ঠিক যায় না, সেটার মানে আসলে bi-product. অনেক কিছুরই ভাল বাংলা হয় না যেমন, DESIGN বা GRAPHICS)
ReplyDelete@Muhammad Tarik Saifullah হাতের কী অবস্থা?
ReplyDeletevaia, tone ar shade er kotha ja likhsen seta ar chobi disen oitai to mil nai :/
ReplyDeleteঠিক করে দিয়েছি, ধন্যবাদ :)
Deleteখুবই Helpful ....Basic জায়গাটা অনেক সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন...ধন্যবাদ
ReplyDelete