বছর চলে যাচ্ছে সময়ের চেয়ে দ্রুত। এই ব্লগ শুরু করলাম মনে হয় এই সেদিন, দেখতে দেখতে ৯ বছর চলে গেল! উপলব্ধি হচ্ছে মানুষের কাজের সময় এই পৃথিবীতে আসলে খুব বেশী না, যাবার আগে তাই কিছু দাগ রেখে যাই। এ বছরে কিছু দাগাদাগি তুলি দি'
বলে নেওয়া ভাল এ বছর প্রায় গোটা সময়টা বিভিন্ন এন জি ও এবং আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্যে দিয়েছি। একটা কারণ ছিল অনেকদিন পর পুরোনো নেটওয়ার্ক ঝালিয়ে নেওয়া আর মূল কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক ঃপ, যে সব মনে পড়ছে তার কয়েকটা সম্ভবত আগেও শেয়ার করেছি, দ্বিতীয়বারের মত দিয়ে থাকলে দুঃখিত-
১. রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠ্যবই
এ বছরের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট করেছি রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠ্যবইয়ের মূল অলংকরণ। ইউনিসেফ থেকে কক্সবাজার এডুকেশন নামে এই একাডেমিক প্রজেক্ট বেশ বিরাট আকারের ছিল। আক্ষরিক অর্থেই হাজার হাজার ড্রয়িং। আমাদের টিমে ছিল নাসরীন সুলতানা মিতু (আমাদের মধ্যে একমাত্র একাডেমিক মানুষ ও সেই সাথে কার্টুনিস্ট), ছিল রোমেল বড়ুয়া (পরিপাটি পেশাদার কার্টুনিস্ট), সব্যসাচী চাকমা ('জুম' আঁকিয়ে), কার্টুনিস্ট হাসিব কামাল, এ সময়ের কুংফু কার্টুনিস্ট আসিফুর রহমান (চার হাত পায়ে দুর্দান্ত এঁকে যাচ্ছে)। মানে সব মিলে দারুণ একটা টিম। আঁকার পরিমাণ বললে একটা ধারনা হতে পারে, আমি একা এঁকেছি ১৫ টা বই, গড়ে সেগুলিতে ১৫ পৃষ্ঠা অলংকরণ, এবং ডেডলাইন ছিল অবিশ্বাস্য কম। কারণ রোহিঙ্গা শিশুরা যেহেতু আন্তর্জাতিক রাজণৈতিক জটিলতায় চাইলেও আমাদের দেশের পাঠ্যবই পড়তে পারবে না সেহেতু তাদের মত করে তাদের ভাষা ও ইংরেজীতে নতুন বিশেষ পাঠ্যবই না করা পর্যন্ত তারা পড়াশোনা করতে পারছে না, তার মানে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী বাচ্চাদের শিক্ষাজীবন অনেকটাই নির্ভর করছে আমরা কত তাড়াতাড়ি বইগুলি আঁকা ও ডিজাইন করে প্রিন্ট রেডি করে দিতে পারবো তার ওপর! এর চেয়ে বড় মোটিভেশন নেই, বেশ চাপ নিয়ে কাজ করেছি সবাই। কিন্তু সব শেষে অন্য একটা আফসোসও ছিল- বাংলাদেশের আমরা কিন্তু এত দারুণ বই পাই না। রোহিঙ্গা বাচ্চাদের জন্যে তার চেয়ে বহুগুণে মানসম্মত পাঠ্যবই করা হয়েছে ইউনিসেফের তত্ত্বাবধানে। আঁকার কথা বলছি না, পাঠ্যপুস্তকের মানও বেশ ভালো, গল্পের মত করে ছোট বাচ্চাদের দারুণ কিছু মেসেজ শেখানো। আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন আমাদের দেশেও তা হবে, হতেই হবে।
দুঃখজনক হল এখনো পর্যন্ত সেই পরজেক্টের কোন ছবি আমরা কোথাও দেখাতে পারছি না চুক্তির কারণে, সময়মত কোন একদিন শেয়ার করা যাবে আশা করি।
২. দুর্যোগ মোকাবিলা কমিক্স
এর পর কয়েকটা কমিক করা হয়েছে, এবং এবারে একটা নতুন প্রসেসে কাজ করেছি, মূল স্টোরিবোর্ড ও গল্প লিখে ইংকিং আর কালারিং করতে দিয়েছি তরুণ কার্টুনিস্টদের, এবং তারা বেশ ভাল কাজ করেছে। যেওম একটা ছিল এডুকো প্রতিষ্ঠানের, বাচ্চাদের জন্যে দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি নিয়ে করা একটা কমিক্স, পিয়া ও দৈত্য, ক্যারেক্টার শিট আর অন্যান্য স্টাইল গল্প সহ ধরিয়ে দেয়া হল চট্টগ্রামের ডাক্তার ও কার্টুনিস্ট নাইমুর রহমান মাহিরকে। সে বেশ দ্রুত নামিয়ে দিল গোটা কমিক্স! দুই এক পেইজ দেয়া হল-
৩. বন্যা সতর্কতা কমিক্স
এরপর করা হয়েছে মুসলিম এইডের কমিক্স ও ফ্লিপ কার্ড-
৫. স্টোরিবোর্ড Friendship Hospital-
৬. পুষ্টি কমিক্স
এবং শেষ মুহুর্তে আরেকটা বিরাট কমিক্স পরজেক্ট চলে এল, এবং কাজও ৯৫% শেষ সেটা হল BRAC এর ৬ টা কমিক্স যথারীতি আমি গল্প ও স্টোরিবোর্ড করে অন্যদের পাঠিয়ে দিলাম আর অতি দ্রুত তারা এঁকে শেষ করে দিল সব বই, আসলে এখন যারা কাজ করছে তারা অনেকেই বেশ প্রফেশনাল ও ভাল কাজ করছে। এই টিমে ছিল- আসিফুর রহমান (ওর গল্পটা ওরই লেখা), রোমেল বড়ুয়া, হাসিব কামাল, সব্যসাচী চাকমা পোলো, নাইমুর রহমান মাহির ও রাকিব রাজ্জাক। দারুন উপভোগ করেছি এই সিরিজটা, অনেক ক্যারেক্টার আর অনেক মজার মজার গল্প লেখার সুযোগ ছিল, আশা করি এটাও ভাল একটা কাজ হয়ে থেকে যাবে আমাদের পোর্টফোলিওতে।
তো মোটামুটিভাবে এই ছিল ২০১৯, এ ছাড়া ঢাকা কমিক্সের অন্যান্য ব্যবসাপাতি, হাবিজাবি, আর নিজের কমিক্স বইয়ের কথা বলা হলো না, সেগুলি অচিরেই আসছে ফেব্রুয়ারি বইমেলায় আমাদের ঢাকা কমিক্স স্টলের বরাতেই জানিয়ে দেয়া হবে। তার আগে পর্যন্ত এটুকুই থাকলো, সবাইকে অগ্রিম Happy New Year!
বলে নেওয়া ভাল এ বছর প্রায় গোটা সময়টা বিভিন্ন এন জি ও এবং আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্যে দিয়েছি। একটা কারণ ছিল অনেকদিন পর পুরোনো নেটওয়ার্ক ঝালিয়ে নেওয়া আর মূল কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক ঃপ, যে সব মনে পড়ছে তার কয়েকটা সম্ভবত আগেও শেয়ার করেছি, দ্বিতীয়বারের মত দিয়ে থাকলে দুঃখিত-
১. রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠ্যবই
এ বছরের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট করেছি রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠ্যবইয়ের মূল অলংকরণ। ইউনিসেফ থেকে কক্সবাজার এডুকেশন নামে এই একাডেমিক প্রজেক্ট বেশ বিরাট আকারের ছিল। আক্ষরিক অর্থেই হাজার হাজার ড্রয়িং। আমাদের টিমে ছিল নাসরীন সুলতানা মিতু (আমাদের মধ্যে একমাত্র একাডেমিক মানুষ ও সেই সাথে কার্টুনিস্ট), ছিল রোমেল বড়ুয়া (পরিপাটি পেশাদার কার্টুনিস্ট), সব্যসাচী চাকমা ('জুম' আঁকিয়ে), কার্টুনিস্ট হাসিব কামাল, এ সময়ের কুংফু কার্টুনিস্ট আসিফুর রহমান (চার হাত পায়ে দুর্দান্ত এঁকে যাচ্ছে)। মানে সব মিলে দারুণ একটা টিম। আঁকার পরিমাণ বললে একটা ধারনা হতে পারে, আমি একা এঁকেছি ১৫ টা বই, গড়ে সেগুলিতে ১৫ পৃষ্ঠা অলংকরণ, এবং ডেডলাইন ছিল অবিশ্বাস্য কম। কারণ রোহিঙ্গা শিশুরা যেহেতু আন্তর্জাতিক রাজণৈতিক জটিলতায় চাইলেও আমাদের দেশের পাঠ্যবই পড়তে পারবে না সেহেতু তাদের মত করে তাদের ভাষা ও ইংরেজীতে নতুন বিশেষ পাঠ্যবই না করা পর্যন্ত তারা পড়াশোনা করতে পারছে না, তার মানে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী বাচ্চাদের শিক্ষাজীবন অনেকটাই নির্ভর করছে আমরা কত তাড়াতাড়ি বইগুলি আঁকা ও ডিজাইন করে প্রিন্ট রেডি করে দিতে পারবো তার ওপর! এর চেয়ে বড় মোটিভেশন নেই, বেশ চাপ নিয়ে কাজ করেছি সবাই। কিন্তু সব শেষে অন্য একটা আফসোসও ছিল- বাংলাদেশের আমরা কিন্তু এত দারুণ বই পাই না। রোহিঙ্গা বাচ্চাদের জন্যে তার চেয়ে বহুগুণে মানসম্মত পাঠ্যবই করা হয়েছে ইউনিসেফের তত্ত্বাবধানে। আঁকার কথা বলছি না, পাঠ্যপুস্তকের মানও বেশ ভালো, গল্পের মত করে ছোট বাচ্চাদের দারুণ কিছু মেসেজ শেখানো। আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন আমাদের দেশেও তা হবে, হতেই হবে।
দুঃখজনক হল এখনো পর্যন্ত সেই পরজেক্টের কোন ছবি আমরা কোথাও দেখাতে পারছি না চুক্তির কারণে, সময়মত কোন একদিন শেয়ার করা যাবে আশা করি।
২. দুর্যোগ মোকাবিলা কমিক্স
এর পর কয়েকটা কমিক করা হয়েছে, এবং এবারে একটা নতুন প্রসেসে কাজ করেছি, মূল স্টোরিবোর্ড ও গল্প লিখে ইংকিং আর কালারিং করতে দিয়েছি তরুণ কার্টুনিস্টদের, এবং তারা বেশ ভাল কাজ করেছে। যেওম একটা ছিল এডুকো প্রতিষ্ঠানের, বাচ্চাদের জন্যে দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি নিয়ে করা একটা কমিক্স, পিয়া ও দৈত্য, ক্যারেক্টার শিট আর অন্যান্য স্টাইল গল্প সহ ধরিয়ে দেয়া হল চট্টগ্রামের ডাক্তার ও কার্টুনিস্ট নাইমুর রহমান মাহিরকে। সে বেশ দ্রুত নামিয়ে দিল গোটা কমিক্স! দুই এক পেইজ দেয়া হল-
৩. বন্যা সতর্কতা কমিক্স
এরপর করা হয়েছে মুসলিম এইডের কমিক্স ও ফ্লিপ কার্ড-
৪. RIC বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিক্স
৫. স্টোরিবোর্ড Friendship Hospital-
৬. পুষ্টি কমিক্স
এবং শেষ মুহুর্তে আরেকটা বিরাট কমিক্স পরজেক্ট চলে এল, এবং কাজও ৯৫% শেষ সেটা হল BRAC এর ৬ টা কমিক্স যথারীতি আমি গল্প ও স্টোরিবোর্ড করে অন্যদের পাঠিয়ে দিলাম আর অতি দ্রুত তারা এঁকে শেষ করে দিল সব বই, আসলে এখন যারা কাজ করছে তারা অনেকেই বেশ প্রফেশনাল ও ভাল কাজ করছে। এই টিমে ছিল- আসিফুর রহমান (ওর গল্পটা ওরই লেখা), রোমেল বড়ুয়া, হাসিব কামাল, সব্যসাচী চাকমা পোলো, নাইমুর রহমান মাহির ও রাকিব রাজ্জাক। দারুন উপভোগ করেছি এই সিরিজটা, অনেক ক্যারেক্টার আর অনেক মজার মজার গল্প লেখার সুযোগ ছিল, আশা করি এটাও ভাল একটা কাজ হয়ে থেকে যাবে আমাদের পোর্টফোলিওতে।
আসিফ |
রোমেল |
সাব্যসাচী চাকমা |
রাকিব রাজ্জাক |
মাহির |
হাসিব |