February 28, 2017
February 22, 2017
বর্ণমেলায়
প্রথম আলোর একটা ভাষা দিবসের আয়োজন আছে- বর্ণমেলা। মূলত: শিশুদের জন্যে এই আয়োজন। আমরা ঢাকা কমিক্স থেকে সেখানে গিয়েছিলাম বাচ্চাদের ছবি/ক্যারিকেচার করতে। আমি, কার্টুনিস্ট প্রসূন, কার্টুনিস্ট রকিব। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫০ ক্যারিকেচার করেছি তিনজন মিলে। ভয়ানক ভীড়, রীতিমত লাইন দিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে তাদের অভিভাবক দাঁড়িয়ে ছিলেন।
বাচ্চাদের আঁকা কিন্তু ভয়ানক কঠিন কাজ। কারন তাদের নাক মুখ এর 'ফর্ম ' ডেভেলপ হয়নি তাই সেগুলি বোঝাও কঠিন। লাইন ড্রয়িং এ একটু এদিক ওদিক হলেই চেহারা পালটে বুড়োটে হয়ে যাবে। প্রথম কলম দিয়ে করতে গিয়ে মাখিয়ে ফেলে পরে একটা 6B পেন্সিল দিয়ে করলাম। সেটা বলার জন্যে এই লেখা না, লিখছি কারণ দুইটা জিনিস আমাদের চোখে লেগেছে কাল।
১. বাচ্চাদের কে তাদের বাবা মা এমনকী কার্টুন আঁকা হবে এমন জায়গাতেও এসে তটস্থ কর দিচ্ছে। 'এভাবে বস'
'হাসো! হাসো!'
'দেখো অন্যেরা কত সুন্দর করে বসেছে'
'নড়ে কেন?'
'অ্যাই লাইন ভাংছো কেন? (এটা অন্যদের বাচ্চাকে বলা) '
মানে সব মিলে এই মজার জিনিসটাকেও আতংকজনক কিছু একটা বানিয়ে ফেললেন তাঁরা দেখতে দেখতে। বাচ্চারা সামনে বসে খুবই নার্ভাস ভাবে তাকিয়ে থাকলো। আমরা টুকটাক কথাবার্তা বলে বলে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। ব্যাপারটা ভালো লাগলো না।
২. আমি ক্যারিকেচার এর সাবজেক্ট এর সাথে কথা বলি। কে কেমন সে কী করে সেটাও জানি। যেমন একজনকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে সারাদিন রোদ এ দৌড়াদৌড়ি করে। জিজ্ঞেস করলাম-
- 'তুমি কি খেল?'
- 'হ্যাঁ (অলরেডি সে একটু সহ্য হল, কারণ তার পছন্দের কিছু নিয়ে কথা বলা হচ্ছে) ক্রিকেট খেলি'
এর থেকে আমি সব শেষে তার হাতে একটা ক্রিকেট ব্যাট ধরিয়ে দিলাম, শেষে লেখা বেস্ট ব্যাটসম্যান অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ২০৩৩!
কে জানে এই আঁকাটা হয়ত তার জন্যে অনেক দারুণ কিছু হয়ে গেল।
আমার সামনে তাই যখন এক কিশোরী বছর ১২'র এসে বসলো। দেখেই মনে হল সে অনেক পড়ে, তবে একটা চাপ এর মধ্যে আছে এমন মনে হল। আই কন্ট্যাক্ট করছে না। ভঙ্গী আড়ষ্ট, পিছনে তার মা দাঁড়ানো। আমি জিজ্ঞেস করলাম-
-'তুমি কমিক্স পড়?'
-'হ্যাঁ পড়ি।' ছোট উত্তর।
-কী পড়?
- টিনটিন
- এস্টেরিক্স পড়ো না?
- পেলে পড়ি।
- গল্পের বই?
- মেয়েটা একটু চুপ করে তারপরে বল্ল-
- সারাদিন স্কুলের পড়াই পড়ি, গল্পের বই কখন পড়ব?
- কেন ছুটির দিনে?
- সেদিন কোচিং থাকে।
শুনে আমি থেমে গেলাম। এর মানে কী? ছুটির দিনেও স্কুলের বাচ্চারা একটা গল্পের বই নিয়ে বসতে পারছে না আমরা এমন কী বিদ্যাদিগগজ প্রজন্ম বানাচ্ছি? আমি আর কিছুই বললাম না, কিন্তু মনটা খারাপ হয়ে গেল বেশ। আসলে এখনকার প্রজন্ম বই পড়ে না, মাথায় কিছু নেই আমরা যারা বলে দায় সারাচ্ছি, তারাই কি আসলে নতুনদের ঠিকমত বেড়ে উঠতে দিচ্ছি? এই বইমেলায় আমার নিজের একটা স্টল আছে, বাংলা কমিক্স এর। সেখানে বসে কিন্তু কখনো আমার মনে হচ্ছে না বাচ্চারা পড়ে না। আমরা ভীড় সামলাত হিমশিম খাই। এবং পুরোনো পাঠকেরা এসে এই সিরিজের আর কী নতুন বই এসেছে সেটা জানতে চায়। বইমেলার এই সময় ছাড়া তারা কি এই সুযোগটা পাচ্ছে? যদি না পায় সেটা আমাদের সমস্যা। বাবা-মায়ের সমস্যা।
মার্চ মাসে বাচ্চাদের স্কুলে স্কুলে বই পৌঁছে দেবার একটা প্ল্যান মাথায় নিয়ে ঘুরছি। দেখা যাক কী করা যায়।
ক্যারিকেচার এর মডেল ও আমি। |
February 12, 2017
February 01, 2017
পার্স্পেক্টিভ আর ফটো রেফারেন্স
আমার কমিক্স এ সবচেয়ে দূর্বল জায়গা হল ব্যাকগ্রাউন্ড, রুহানের এই পর্ব থেকে সেটা সারানোর চেষ্টা করছি। আসলে একটু সময় দিয়ে কিছু রেফারেন্স ফটো ঘাঁটা (কিছু ক্ষেত্রে প্রায় ট্রেস করা :p) গেলেই হয়। যেমন এই দৃশ্যটা ছিল রুহান আর রিদি একটা পুরোনো ভাঙ্গা বাড়িতে অনেক ছড়ানো ছিটানো বই দেখতে পেলো।
এখানে প্রথমে কিছু পুরোনো বাড়ি দেখলাম গুগল করে, আসলে আজব ব্যাপার হল ভাঙ্গা বাড়ি আঁকলে কেন জানি খুব একটা ভাঙ্গা লাগে না। তখন বুঝলাম টেক্সচার মিসিং, বেশ ময়লা ময়লা কিছু টেক্সচার লাগবে। তা-ও পেলাম, এবারে লাগবে বই। ছড়ানো ছিটানো বই কখনো আঁকি নি, সেটাও অনেক শেখার আছে, বই যে কতভাবে ভাঁজ খেয়ে পড়ে থাকতে পারে সেটা দেখে এঁকে বুঝলাম। যাই হোক এটাও এমন কিছু হয় নি তবে আগের ভাসা ভাসা ব্যাকগ্রাউন্ড এর চেয়ে ভাল। আরো কিছু রেফারেন্স ঘেঁটে আঁকা কাজ দিলাম। কালার করা ফাইনালটা পরে দেয়া যাবে।
Subscribe to:
Posts (Atom)
হ্যাংওভার কাটিয়ে
একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...
-
আইডিয়া পাওয়া বা ক্রিয়েটিভ কাজ ইত্যাদিকে এখনো আমাদের সমাজে একটা অলৌকিক প্রতিভা হিসেবে ভাবা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সত্যও বটে। ত...
-
দীর্ঘ দশ মাস পর ২০১৮ সালের বিজ্ঞান বিভাগের নবম-দশম শ্রেণির ৫ টা (গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান) ও আর্টস ও কমার্স বি...
-
এইবার আমরা হুইলের আসল কাজটা দেখি। মানে রঙ করার সময় এটা আসলে কি কাজে লাগে। একটা ছবি রঙ করার সময় আসলে মূল যে ব্যপারটা মাথায় আগে আনতে হবে সেটা ...