December 23, 2016
December 14, 2016
তাগড়া
ঠিক দশ বছর আগের কথা, সেন্টার ফর লিবারেশন ওয়ার স্টাডিজ থেকে আমার বস আহসান হাবীব কে ডেকে পাঠালো, তারা মুক্তিযুদ্ধের কমিক্স সিরিজ করবে। আমিও মহা উত্তেজিত হয়ে তাঁদের মিটিং এ গেলাম বসের ডাকে। প্ল্যানটা দারুণ, তাঁদের অর্থায়নে একের পর এক কমিক্স হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। প্রথম গল্প হিসেবে সিলেক্ট করা হল মেজর (অবঃ) কামরুল ইসলাম এর একটা বইয়ের একটা ছোট গল্প , সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লেখা সেই গল্প নিয়েই আমার প্রথম কমিক্স এর কাজ শুরু (এর আগে যদ্দূর মনে পড়ে কোন কমিক্স ছাপা হয় নি)। ড্রাফটিং পেন আর জল রঙ এ হাতে এঁকে ১৫ কি ২০ দিনের মাথায় কাজ জমা দিলাম। সেটা ছাপাও হল। কিন্তু কী এক আশ্চর্য কারণে সেই বই কখনো মার্কেট এ এলো না। বরং পরের বইমেলায় অবাক হয়ে দেখলাম সেই একই গল্প নিয়ে গ্রামীণ ফোনের অর্থায়নে বিরাট ঘটা করে আরেকটা কমিক্স বের হয়েছে, এবং এখানে উদ্যোগ নিয়েছে সেই একই সেন্টার ফর লিবারেশন ওয়ার স্টাডিজ। আমি কিছুই বুঝলাম না, আহসান ভাইও বোঝেন নি। আমরা আসলে আর বোঝার চেষ্টাও করিনি। কর্পোরেট আর স্পন্সরের কোন এক মারপ্যাঁচ এ পড়েছিলাম আমরা অতি সরল কার্টুনিস্ট গোষ্ঠী। সে যাক গে। অনেক দিন পর সেই কমিক্স এর একটা কপি খুঁজে পেতে মনে হল অন্তত এখানে শেয়ার দিয়ে রাখি। কিছু মানুষ অন্তত দেখুক।
ভাল কথা সেই কমিক্স প্রজেক্ট ওখানেই থেমে গিয়েছিল। আমরাও আর যোগাযোগ করিনি।
December 09, 2016
২০১৬
এ বছর দারুণ গেল। বলতে গেলে তেমন কোন কাজই করিনি। গত বছর এমন অসম্ভব কাজের চাপ এ ছিলাম যে সব কাজ শেষ করে প্রতিজ্ঞা করেছি পরের বছর রেস্ট। আর আগের বছর অন্তত তিনটা বইয়ের কাজ করেছিলাম যেটা শেষ মুহূর্তে বের হয় নি, মানে সেটা এই বছর হবে। তার মানে কিছু না করেও তিনটা বই নেমে যাচ্ছে।
এবারে ইয়ার ইন রিভিউ টাইপ এই পোস্ট টা দেয়া যাক,
১. এক গাদা বই পড়েছি।
২. মুভি দেখেছি প্রায় প্রতিদিন। এ বছর সিরিজ আর সিজন ব্যাপারটা ধরতে পেরেছি।
৩. দুইটা দেশ ঘুরেছি, মালদ্বীপ আর শ্রীলংকা, অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ট্রাভেল গাইড ছিল নাসরীন সুলতানা।
৪. আঁকিনি বলা যাবে না। এঁকেছি প্রচুর, কিন্তু কোনটাই সেই অর্থে ক্লায়েন্ট এর কাজ না, মানে টাকা কামাইং কাজ না। নিউ এইজ এ পলিটিক্যাল কার্টুন অনেক কমে গেছে এই বছর। সেটা আমার কারণে না। গোটা দেশেই রাজনৈতিক প্রতিবাদ এর খরা চলছে। একটা চাপা ভয় সবাইকে আটকে রেখেছ বেশ অনেক দিন থেকে। তারপরেও সব বড় ঘটনায়ই এঁকেছি। সংখ্যায় কম, এই যা।
৫. ব্লগ এ এন্ট্রি কমে যাবার একটা বড় কারণ হল এই বছর বেশীরভাগ পোস্ট পড়েছে ফেইসবুক পেইজ এ। এখন থেকে ভাবছি যা-ই পোস্ট করব মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ সব পোস্ট আগে ব্লগ এ তুলে সেটার লিংক পেইজ এ দেয়া হবে।
৫. মাঝে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ কমিক আর্ট এর সম্পাদক জন এ লেন্ট এসেছিলেন। এই কিংবদন্তিতূল্য মানুষটার সাথে দেখা হওয়াও একটা ভাগ্যের ব্যাপার। যে ক'দিন তিনি ছিলেন তাঁকে নিয়ে সব কার্টুনিস্টদের কাছে গিয়েছি। তাঁর একটা সাক্ষাৎকার ও নিয়েছি উন্মাদ এর জন্যে।
ঢাকা কমিক্স এর আপডেট
৬. ঢাকা কমিক্স এ অনেক সময় দিয়েছি। ব্যবসা সম্পূর্ন আলাদা কাজ, এটা অনেকটা গেম খেলার মত। খুবই জটিল গেম। তিন বছর এ ঢাকা কমিক্স মোটামুটি একটা ভাল জায়গায় পৌঁছেছে। এই বছর এর সব থেকে বড় অর্জন হল আমাদের কমিক্স ভারতের পশ্চিমবঙ্গে- মূলতঃ কলকাতায় জায়গা করে নিয়েছে! শ্রীমান শান্তনু ঘোষ এর কল্যাণে ও হাসান খুরশীদ রুমী ভাইয়ের মধ্যস্থতায় ব্যাপারটা সম্ভব হয়েছে।
৭. ঢাকা কমিক্স এর নিজস্ব একটা অফিস নেয়া হয়েছে। একেবারেই ছোটখাটো, তবে কাজ করার জন্যে যথেষ্ট। সেখানে আমি আর কার্টুনিস্ট আসিফ প্রতিদিন রুটিন করে কমিক্স আঁকছি। এটা একটা গোডাউন আর শো রুম এর মত ও কাজ করছে।
বছর এখনো শেষ হয়নি, তাও মনে হচ্ছে প্রেশার না নিয়েও ধীরে সুস্থে খারাপ গেলো না তো। আশা করি সামনের দিকে আরো ভাল যাবে। দেখা যাক।
এবারে ইয়ার ইন রিভিউ টাইপ এই পোস্ট টা দেয়া যাক,
১. এক গাদা বই পড়েছি।
২. মুভি দেখেছি প্রায় প্রতিদিন। এ বছর সিরিজ আর সিজন ব্যাপারটা ধরতে পেরেছি।
৩. দুইটা দেশ ঘুরেছি, মালদ্বীপ আর শ্রীলংকা, অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ট্রাভেল গাইড ছিল নাসরীন সুলতানা।
আমি আর মিতু, প্রথম সেলফি, সেলফি যে আসলে মিরর ওঠে এটা সেদিন জেনেছি। |
মালদ্বীপ এর হুরা আইল্যান্ড এ স্নরকেলিং। |
শ্রীলংকার মিহিন তালে তে। |
শ্রীলংকার উইলপাটু রিজার্ভ ফরেস্ট এ ক্যাম্পিং। |
৪. আঁকিনি বলা যাবে না। এঁকেছি প্রচুর, কিন্তু কোনটাই সেই অর্থে ক্লায়েন্ট এর কাজ না, মানে টাকা কামাইং কাজ না। নিউ এইজ এ পলিটিক্যাল কার্টুন অনেক কমে গেছে এই বছর। সেটা আমার কারণে না। গোটা দেশেই রাজনৈতিক প্রতিবাদ এর খরা চলছে। একটা চাপা ভয় সবাইকে আটকে রেখেছ বেশ অনেক দিন থেকে। তারপরেও সব বড় ঘটনায়ই এঁকেছি। সংখ্যায় কম, এই যা।
৫. ব্লগ এ এন্ট্রি কমে যাবার একটা বড় কারণ হল এই বছর বেশীরভাগ পোস্ট পড়েছে ফেইসবুক পেইজ এ। এখন থেকে ভাবছি যা-ই পোস্ট করব মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ সব পোস্ট আগে ব্লগ এ তুলে সেটার লিংক পেইজ এ দেয়া হবে।
৫. মাঝে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ কমিক আর্ট এর সম্পাদক জন এ লেন্ট এসেছিলেন। এই কিংবদন্তিতূল্য মানুষটার সাথে দেখা হওয়াও একটা ভাগ্যের ব্যাপার। যে ক'দিন তিনি ছিলেন তাঁকে নিয়ে সব কার্টুনিস্টদের কাছে গিয়েছি। তাঁর একটা সাক্ষাৎকার ও নিয়েছি উন্মাদ এর জন্যে।
ঢাকা কমিক্স এর আপডেট
৬. ঢাকা কমিক্স এ অনেক সময় দিয়েছি। ব্যবসা সম্পূর্ন আলাদা কাজ, এটা অনেকটা গেম খেলার মত। খুবই জটিল গেম। তিন বছর এ ঢাকা কমিক্স মোটামুটি একটা ভাল জায়গায় পৌঁছেছে। এই বছর এর সব থেকে বড় অর্জন হল আমাদের কমিক্স ভারতের পশ্চিমবঙ্গে- মূলতঃ কলকাতায় জায়গা করে নিয়েছে! শ্রীমান শান্তনু ঘোষ এর কল্যাণে ও হাসান খুরশীদ রুমী ভাইয়ের মধ্যস্থতায় ব্যাপারটা সম্ভব হয়েছে।
৭. ঢাকা কমিক্স এর নিজস্ব একটা অফিস নেয়া হয়েছে। একেবারেই ছোটখাটো, তবে কাজ করার জন্যে যথেষ্ট। সেখানে আমি আর কার্টুনিস্ট আসিফ প্রতিদিন রুটিন করে কমিক্স আঁকছি। এটা একটা গোডাউন আর শো রুম এর মত ও কাজ করছে।
ঢাকা কমিক্স স্টুডিও |
৮. রুহান রুহান এর তৃতীয় পর্বের প্রায় ৬০ পৃষ্ঠা এঁকে শেষ করেছি। মোট ২২০ পৃষ্ঠার কমিক্স। এটা একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। এটা নিয়েই আলাদা একটা পোস্ট দেব যেদিন শেষ হবে।
৬০ পেইজ থেকে কিছু স্যাম্পল। বড় করে দেখতে চাইলে ক্লিক করুন |
৯. ঢাকা কমিক্স এর একজন অফিস এসিস্ট্যান্ট রাখা হয়েছে। তাকে নিয়ে বই লিখে ফেলা যাবে। ফোন না ধরার ও সময় মত কাজ না করার যেই সব অদ্ভূত কারণ সে বলে তা দেখে আমরা ভাবছি ক্রিয়েটিভ রাইটিং এর ডিপার্টমেন্ট এ তাকে নিয়ে নেয়া যাবে। শেষ আপডেট হল অফিসের ওয়াই ফাই পাসওয়ার্ড তাকে দেয়া হচ্ছে না বলে সে অফিসে আসার আগ্রহ পাচ্ছে না।
১০. এর আগে এটা ব্লগে বলেছি তাও আবার না বললেই না। এ বছর ঢাকা কমিক্স কাজী আনোয়ার হোসেন এর সাথে একটা কমিক্স নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে! তাঁর পঞ্চ রোমাঞ্চ অবলম্বনে আমরা ৫ জন মিলে ১৫০ পৃষ্ঠার কমিক্স নামাচ্ছি একটা!
কাজীদা'র সাথে! |
১১. সব শেষে সবথেকে বড় সংবাদ। ঢাকা কমিক্স এর কাজ ও ব্যাক্তিগত কমিক্স এর কাজ বিবেচনায় আমি এ বছর নারায়ণ দেবনাথ কমিক্স পুরস্কার পেতে যাচ্ছি! পুরস্কার তুলে দেবেন 'না' স্বয়ং! এটা একেবারে পরাবাস্তব অনুভূতি। একটা বড় ভূমিকা ছিল শান্তনু ঘোষ এর।
নারায়ণ দেবনাথ ঘোষোণা লিখছেন! |
তাঁর লেখা! |
Subscribe to:
Posts (Atom)
হ্যাংওভার কাটিয়ে
একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...
-
আইডিয়া পাওয়া বা ক্রিয়েটিভ কাজ ইত্যাদিকে এখনো আমাদের সমাজে একটা অলৌকিক প্রতিভা হিসেবে ভাবা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সত্যও বটে। ত...
-
দীর্ঘ দশ মাস পর ২০১৮ সালের বিজ্ঞান বিভাগের নবম-দশম শ্রেণির ৫ টা (গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান) ও আর্টস ও কমার্স বি...
-
এইবার আমরা হুইলের আসল কাজটা দেখি। মানে রঙ করার সময় এটা আসলে কি কাজে লাগে। একটা ছবি রঙ করার সময় আসলে মূল যে ব্যপারটা মাথায় আগে আনতে হবে সেটা ...