January 18, 2013

সহজ রিক্সা শিক্ষা


রিক্সা জিনিসটা আঁকার জন্যে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। অনেকদিন ধরেই স্টাডি করব করব ভেবে রেখেছিলাম, সেদিন হঠাতই সুযোগ ঘটলো, তেজগাঁয়ের যায়যায়দিন প্রতিদিন অফিসের সামনে আমার রিক্সার চেইন পড়ে গেল। রিক্সাওয়ালা ঘঁটাঘাঁটি করে বিরস মুখ করে জানালো বেশ বড় সমস্যা। মেকার দেখাতে হবে। কপাল ভালো পাশেই মেকার পাওয়া গেল, সারি দিয়ে রাখা রিক্সা আর ভ্যানের পাশে সুযোগ পেয়ে বসে গেলাম স্কেচবুকিং এ। একটানে নামায়ে ফেললাম যেটুকু বোঝার। এখন যাকে বলে- রিক্সার ঝামেলা শেষ!
সবচেয়ে বড় প্যাঁচ যেখানে লাগে সেখান থেকে শুরু করাই ভাল। দুইটা ত্রিভূজ মুখোমুখি বসে একটা ট্রাপিজিয়াম ফর্ম করলো। তার সাথে হাতল ওয়ালা চাকা বসলো প্রথম ত্রিভূজের একবাহুর সাথে সমান্তরালে। এবং সেই প্রথম ত্রিভূজের শীর্ষে বসলো চেইনের বড় গিয়ারটা। (রীতিমত ইউক্লিড মনে হচ্ছিলো নিজেকে যখন সল্ভ করছিলাম, তায় ব্যাপারটা আবার 'এলিমেন্টারি') সিটের গোড়া থেকে আবার ডান্ডা নেমে চলে গেল পেছনে, এটা আসলে ভর নেবে পুরো যাত্রীর।



পেছনের সিট টা বেশ দারুণ। একজোড়া হাফ বুমেরাং কাঠের আড়ার ওপর ত্রিশূল (আসলে পনচশূল) এ গাঁথা পাঁচ খন্ড বরাক বাশের চটা। যা আসলে হাতপাখার মত খুলে বানালো যাত্রীর মাথার ছাউনী। ত্রিশূলের গোড়া আর পেছনের চাকার মাঝে বসানো থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নন ইলাস্টিক স্প্রিং (সম্ভবত প্রথম ডিজাইনের সময় এটার কাজ ছিলো সাসপেন্সর এর, পরে লোকাল মিস্তিরিদের বোঝার ভুলে এটা দিনে দিনে আরো পুরু হয়ে যাচ্ছে)
এবারে লক্ষণীয় যে দুই চাকা আর চেইনের দুই গিয়ার সব গুলি বৃত্তের কেন্দ্র কিন্তু এক রেখা বরাবর থাকে, আর চাকার স্পোকগুলি মাঝের কেন্দ্রের সাথে স্পর্শক আকারে ছড়ায়। দুইবার দুইদিকে। সবার শেষে সবার প্রথমে খেয়াল করবার ব্যাপারটা বলা যাক। সেটা হল অনুপাত। রিক্সা পাশ থেকে দেখলে একটা আয়তক্ষেত্রে। যার লম্বা দিকের তুলনায় পাশের দিক প্রায় দ্বিগুণ। সব ঠিক এঁকে এইটা মিস করলে সবই বৃথা। পরে একসময় রিক্সার অন্যান্য টুকি টাকি আবার দেয়া যাবে, আজ এট্টুকুই
আমার বিরস-বদন রিক্সাওয়ালা

No comments:

Post a Comment

হ্যাংওভার কাটিয়ে

একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...