একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। বুঝুক না বুঝুক সবাইকে সব বিষয়েই মত দিতে হবে। এটা ততক্ষণ পর্যন্ত সমস্যা না যতক্ষণ একজন তাঁর মত আরেকজনের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে না। আমরা যেহেতু অন্যেরও মতামত থাকতে পারে এটাই নতুন জানতে পেরেছি, তাঁদের যে দুই পা আলাপ চলার পরেই হাতাহাতি শুরু হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
যাই হোক, তথাকথিত 'নতুন বাংলাদেশ' এ দেখা যাচ্ছে সবাই সবার যা ইচ্ছা করার চেষ্টা করে ভজঘট করে ফেলেছেন। এবং পূর্বেই বুদ্ধিমান মানুষেরা যা যা বলেছেন তা ফলতে শুরু করেছে। ইসলামের ছদ্মবেশে জঙ্গিরা হুমকী দিয়ে বেড়াচ্ছে, গর্ত থেকে উঠে এসেছে এতদিনের লুকিয়ে থাকা ধর্মের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসায়ী দলের সব লোকজন। তাঁদের বিভিন্ন আস্ফালনে বুদ্ধিমানেরা এটাও বুঝতে পারছেন যে কে আসলে মূল লাভের গুড় খাবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি আসন্ন।
যাই হোক, কার্টুনের ব্যাপারী হয়ে রাজনীতির জাহাজের খবর রাখার কথা ছিলো না, কিন্তু পেশায় ও নেশায় যেহেতু রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট, সেহেতু 'বিপ্লব' পরবর্তী সময়েও কার্টুন এঁকে যাচ্ছি। গত কিছুদিনের কাজ এখানে তুলে দিলাম সবার জন্যে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩ মাস। এর পর নির্বাচন না দিলে সংবিধানমতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের। যথাসময়ে তাই পলায়ন করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধসিয়ে দিয়ে পরে নিজের প্রাণ বাঁচালেন। য পলায়তি, স জীবতি।
চলছে 'মব জাস্টিস' এর নামে গণপিটুনি, আর সংখ্যালঘু নির্যাতন, মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর। আর প্রধান উপদেষ্টা সেগুলির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবার বদলে ক'দিন পর পর জাতির উদ্দ্যেশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন। বলছেন- আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যেন বাংলা সিনেমার শেষে পুলিশ চলে এসেছে।
এই কাজটা অগাস্টের শুরুতেই করা। পরে আর প্রিন্ট হয়নি।
ছাত্রলীগের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শিবির কর্মীদের একে একে আত্মপ্রকাশ। হেলমেটের দুইদিক। এই কাজ প্রকাশের পরে যে পরিমাণ নোংরা গালাগাল এর মুখোমুখি হয়েছি তাতে এ কথা স্পষ্ট যে জামাত-শিবির পন্থী বা সমর্থকেরা অত্যন্ত নোংরা। এটা কিন্তু একটা দারুণ সামাজিক গবেষণার উপাত্ত হতে পারে, গত সরকার এর সময় কার্টুনে কারা প্রতিক্রিয়া দেখাতো আর এখন কারা দেখাচ্ছে।