১. ভাব আনুন
টিপস: বেশিদিন এক গেটাপে থাকবেন না, ট্রেন্ড দেখুন, এবার সেটার চেয়ে আলাদা কিছু করুন। হয়ত ট্রেন্ড চলছে গোল ফ্রেমের মোটা চশমা ফ্রেম, আপনি চশমা রাখুন, মোটা ফ্রেমও রাখুন কিন্তু পরুন ত্রিভূজ ফ্রেম। গ্যারান্টি যে একবার আপনাকে এভাবে দেখবে, সারাজীবন বলবে- ওই আর্টিস্ট ওই যে তিনকোণা ফ্রেমের চশমা পরে?
২. ক্রস-সেলফি নেটওয়ার্কিং
নাম শুনে ঘাবড়ানোর কিছু নেই, এটা সবচেয়ে সহজ, আবার সবচেয়ে বেশি কাজের। কোন মতে কোন একটা এমন প্রোগ্রামে যাবার ব্যবস্থা করুন যেখানে নিদেন পক্ষে উপর তলার দুই কি একজন সেলিব্রেটি আসবে, সে আপনার সেক্টরের না হলে আরো ভালো। এরপর তক্কে তক্কে থাকুন সে/ তারা কখন আসে, পেলেই খপ করে ধরে টপ করে ডজনখানেক বিভিন্ন সেলফি তুলুন, সাথে সাথে পোস্ট দিন খুব ভেবে চিন্তে, আপনি তাঁর বিরাট ফ্যান ও আজ দেখে ধন্য হয়ে গেছেন- ভুলেও এমন করে না, পোস্ট দিন এমনভাবে যেন আপনারা অনেক আগের পরিচিত আজ অনেকদিন পরে একত্রে এই প্রোগ্রামে দেখা হয়ে গেছে।
প্রথম কাজ শেষ। এটা পোস্ট করার সাথে সাথে দেখবেন ওই সেলিব্রেটির ফলোয়ার ও ফ্রেন্ডসরা আপনাকে তাদের গুড বুক নিয়ে আসবে। ফলে ওই সেলিব্রেটির সমান সমানে যারা আরো সেলিব্রেটি আছে/ন তারা পরের বার আপনাকে দেখলে একেবারে অচেনা মনে করবে না। তুলনামূলক সহজে এদের সাথেও সেলফি তোলা যাবে। মানে এই জিনিসটা একটা গুণোত্তর ধারায় বাড়তে থাকবে, দিনে দিনে আপনার সেলিব্রেটি বন্ধু বাড়তে থাকবে ও কেউ আর মনে করার চেষ্টা করবে না যে আপনি আসলে কী করেন, সবাই জানবে আপনিও একজন সেলিব্রেটি, সুতরাং যেই কাজই করেন না কেন রেট হবে হাই।
এটা বোঝার জন্যে একটা পুরোনো কৌতুক তুলে দেয়া যাক-
বাবা বিবাহযোগ্য ছেলেকে বললেন, ‘বেটা, তুমি কিন্তু আমার পছন্দমতো মেয়েকে বিয়ে করবে।’এর নামই ফেইক ক্রস প্রোমোশন।
ছেলে বলল, ‘কক্ষণো না।’
বাবা বললেন, ‘করো। কারণ, মেয়েটা আর কেউ নয়, সে হলো বিল গেটসের মেয়ে।’
ছেলে বলল, ‘তাহলে আমি রাজি হতে পারি।’
বাবা গেলেন বিল গেটসের কাছে, ‘আপনার মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে।’
বিল গেটস বললেন, ‘হতেই পারে না।’
‘হতে পারে, কারণ সে বিশ্বব্যাংকের সিইও।’
‘আচ্ছা, তাহলে ঠিক আছে’—বললেন বিল গেটস।
বাবা গেলেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে, ‘আমার ছেলেকে আপনার ব্যাংকের সিইও বানাবেন।’
‘প্রশ্নই আসে না।’
‘আসে। কারণ, সে বিল গেটসের জামাতা।’
‘ওকে। তাহলে হতে পারে।’
টিপস: যেই যেই সেলিব্রেটির সাথে ফটো তুলেছেন তাঁদের একটা ভাল দেখে ফটো নামান, ডিজিটালি সেটা একটু এদিক ওদিকে করে, ছাপ দিয়ে কিছু একটা এঁকে পোস্ট করুন, ও অবশ্যি তাঁকে ইনবক্স করুন। সেলিব্রেটি চয়েজের ক্ষেত্রে খুব সাবধান, পুরান কালের মরা সেলিব্রেটি না, যাদের ফ্যান ফলোয়ার অসংখ্য তাঁদের ভেবে চিন্তে বাছাই করুন। যারা আপনার এই 'ছাপচিত্র' আঁকাটি শেয়ার করলে হবে বিরাট প্রচার।
কেউ একেবারে আঁকতে না জানলেও ক্ষতি নেই, এই নিন টিউটোরিয়াল
৩. বিদেশ যাত্রা
এটা বেশ কঠিন, কিন্তু এটা লাগবেই। কোনভাবে আপনার সেক্টরের সাথে সরাসরি মিলুক না মিলুক কাছাকাছি ধরনের কোন একটা প্রোগ্রামের দাওয়াত জোগাড় করুন, সাধারণত: আপনার সেই ক্রস প্রোমোশন সেলফি ধাপের থেকেই কেউ না কেউ আপনাকে এমনিতেই জানাবে যে এমন একটা বিদেশ যাত্রা প্রোগ্রাম আছে, আমি আর কাউকে তোমার মত চিনি না, তুমি কি যাবে নাকি? ঘটি বাটি বেচে হলেও আপনাকে এটা করতেই হবে। কারণ এই ট্যাগটা যদি একবার আনতে পারেন যে আমার কাজ যেমনই হোক না কেন তোমরা যতই হাসো না কেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে আমি বেশ দামী মানুষ, আমাকে তারা দাওয়াত দিয়ে নিচ্ছে। সিনেমার ক্ষেত্রে যেমন দেশে কেউ দেখুক না দেখুক কোন না কোন একটা বিদেশী এওয়ার্ড আমার ব্যাগে আসলেই আমি ভাল সিনেমা বানাই এইরকম একটা ব্যাপার আছে, আপনার সেক্টরে যেহেতু মানুষ আরো কম খবর রাখে এখানে এতে কাজ আরো বেশি হবে।
টিপস: ভুলেও এ ধরনের কোন প্রোগ্রামের খবর পেলে কারো সাথে জানানো যাবে না, আগে নিজের যাওয়া নিশ্চিত করে যাবার দিন সকালে ভেবে চিনতে স্ট্যাটাস দিন যে আপনি আসলে এটা ডিজার্ভ করেন না কিন্তু দেশের জন্যে দেশের হয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়ে আপনি ধন্য।
৪. গ্যাজেট
টিপস: যথাসম্ভব ট্রেন্ডি থাকুন। বছর বছর আপডেট করুন এই গ্যাজেট। মনে রাখবেন এটা আপনার একটা ইনভেস্ট।
৫. একটু একটু বিপ্লব যোগ করুন
টিপস: বাংলাদেশের লোকাল রাজনীতি বা ধর্ম নিয়ে ভুলেও কিছু করবেন না। বিশেষ করে সরকারের বিরুদ্ধে তো নয়ই, টার্গেট করুন অলরেডি ফাঁপড়ে আছে এমন কোন নির্বিষ কাউকে।
এই ৫ টি ধাপ অনুসরণ করলে সর্বোচ্চ ৩ বছরেই আপনি হয়ে যাবেন একজন বিখ্যাত আর্টিস্ট। আঁকাআঁকি? সেটা শিখতে হলে আবার দেখে নিন ধাপ ২ এর ইউটিউব টিউটোরিয়ালটি।