July 28, 2019
July 21, 2019
ক্যারেক্টার ডিজাইন সহজ টিপস
কার্টুন আঁকতে পারি, কিন্তু নতুন নতুন ক্যারেক্টার আঁকা বেশ ভেজাল লাগে- এমন মনে হয় অনেকেই আছি আমরা। ব্যাপারটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই, কারণ আসলেই বিষয়টা একটু কঠিন। তবে সেটা করার বেশ কিছু টোটকা উপায় আছে, তারই একটা আজ বাতলানো যাক।
প্রথমে যেটা করতে হবে সেটা হল মোটা কোন তুলিতে, বা সাইনপেন, বা মার্কার- সোজা কথা মোটা কালি বের হয় এমন কিছু দিয়ে যে ক্যারেক্টারটা আঁকতে চাচ্ছি তার একটা ছায়া শরীর দাঁড়া করানো, যাকে ইংরেজীতে বলে সিলহুয়েট (silhouette). মুখ চোখ কিছুই নেই, খালি কালোতে অবয়বটা। এটা একেবারে ছোট করে আঁকতে হবে। অনেকটা বুড়ো আঙুলের যেই সাইজ তার মধ্যে। ফলে ভুল টুল যা হবার কমের উপর দিয়েই হবে। এবং যেহেতু খালি কালিতে ছোট ছোট করে আঁকা তাই যত গুলি মাথায় আসে পাশাপাশি খুব কম সময়েই এঁকে ফেলা যাবে। ধরা যাক আমরা একটা কাল্পনিক সামুরাই যোদ্ধা বানাতে চাই, যেটা আবার দেখতে একটু তেলাপোকা ধরনের। ‘ককরোচ সামুরাই’ ধরনের একটা কিছু আরকি। নিচে সেটা কেমন হতে পারে তার কিছু সিলুয়েট এঁকে ফেললাম, একটা মোটা একটা চিকন লম্বা, একটা গরিলা টাইপ- ইত্যাদি।
এবারে কোনটা আমার ভাল লাগছে সেটা একান্তই আমার নিজের ব্যাপার। আর যেহেতু মাথায় যা এসেছে সবই পাশাপাশি এঁকে নিয়েছি তাই সব শেষে ‘অন্যটা হয়ত আরো ভাল হত’ এই আপসোসটা আর থাকবে না। যাই হোক এখানে আমার যেমন গরিলার মত, মানে দুই নাম্বারটা বেশ মজার লেগেছে, এবারে আমি যেটা করবো সেটা হল এটাকে বড় করে নেব। ডিজিটালি হলে ফটোশপে ট্রান্সফর্ম টুল দিয়ে এটা টেনে বড় করে ফেলা যায়, আর হাতে আঁকা হলে কোন একটা ফটোকপির দোকানে গিয়ে দ্বিগুণ সাইজে কপি করে দিতে বলা যায়। আর সেটাকে একটা লাইটের উলটো দিকে ধরে আরেকটা কাগজে অবয়বটা তুলে নিতেও খুব একটা কষ্ট হবে না, সায়েন্সে যারা পড়েছো বা পড়ছো তার অনেকেই জীববিজ্ঞানের প্র্যাকটিকাল খাতায় এই দুর্দান্ত টেকনিকটা ব্যবহার করেছো। আর ফটোশপে যারা আঁকবে তারা তো জানোই কিভাবে লেয়ারের ওপাসিটি কমিয়ে কাজটা করতে হবে। যাই হোক ধরে নিচ্ছি কার্টুনের চরিত্র আঁকতে যাদের ইচ্ছা, তাদেও এই জিনিসটা সমাধানে তারা ঠিকই একটা উপায় বের কওে ফেলবে।
এবারে তাহলে পরের ধাপ।
ছোট করে যেটা এঁকেছিলাম এবারে বড় করে সেটার উপর আবার আরেকটু হাত চালানো। মনে রাখা জরুরী যে এখানে কখনই প্রথমে যা করা হয়েছিলো সেটাই শেষ পর্যন্ত থাকবে এমন না। প্রতি ধাপে একটু একটু করে ঠিক করে নেয়া যেতে পারে। কারণ পুরোটাইা আর্টিস্টের নিজের ইচ্ছা। আর এই ধাপে আরেকটা বুদ্ধি হল খুব বেশী জটিল করে না এঁকে একবারে সহজ জ্যামিতিক ফর্মে গোটা ক্যারেকটারটাকে রাফ করে নেয়া। যত সরল করে রাখা যায়।
এবারে যার যার আঁকার শক্তি দেখানোর পালা। ওই সহজ করে আঁকা ফর্মের মধ্যে যত ইচ্ছা ডিজাইন পুরে দেয়া। এখানে মাথায় ডিজাইন না এলে এই ধরনের রেফারেন্স জোগাড় করে নেয়া যেতে পারে। যেমন এখানে আমি কিছু সামুরাই যোদ্ধার আসল ছবি ইন্টারনেটে দেখে নিয়েছিলাম।
এবারে ফাইনাল করা, যে যেভাবে খুশি করে নার। কলমে আউটলাইন করে পরে রঙ করে নেয়া, বা সাদা-কালোতেই রাখা- সবই আঁকিয়ের মর্জি। মোদ্দা কথা একেবারে আন্দাজে না এঁকে এই পদ্ধতিতে এগোলে জিনিসটা একটু হাতে থাকে। কিন্তু ক্যারেক্টার কী হবে আর রঙ কেমন হবে তা সবই যে আঁকছে তার ওপর। তাহলে শুরু করে দার তোমার নিজের কার্টুন ক্যারেক্টার ডিজাইন?
আবার কথা হবে শিঘ্রী।
July 04, 2019
ক্যারিকেচার বেসিক
ক্যারিকেচার শেখানো যায় না, কিন্তু কী মেথডে চেষ্টা শুরু করা যায় সেটা বোঝা সম্ভব। আঁকান্তিসের চ্যানেল থেকে আরেকটা টিউটোরিয়াল।
July 03, 2019
আমি যখন বড় হব: রোহিঙ্গা শিশুদের আঁকা চিত্রপ্রদর্শনী
রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মায়ানমার আর্মির ভয়ানক নির্যাতনে বিশ্ব হতচকিত, এবং যথারীতি নিরব। অন্তত পৃথিবীর দুঃসময়ে এগিয়ে আসার জন্যে যেই প্রতিষ্ঠানটির অপর মানুষের ভরসা করার কথা সেই জাতিসংঘ নিজেদের একটা ভেড়া প্রমাণিত করে বসে বসে জাবর কাটছে, সম্প্রতি তো এটাও জানা গেল যে তাঁদের কাছে নাকি এই গণহত্যা ঘটতে পারে বলে আগে থেকেই রিপোর্ট ছিল, তারা নাকি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সেটা সময় মত সঠিক বিভাগে পাঠাতে পারেনি (!)। পৃথিবীর সবথেকে অপরাধী আমি মনে করি যারা যুদ্ধ করে তারা না, যারা সেটা ঘটায় ও সেটা ঘটতে দেয় তারা।
যাই হোক, পৃথিবী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্যে নাকি কান্না কাঁদা ছাড়া আর কিছু করুক না করুন বাংলাদেশ সরকার কিন্তু অভূতপূর্ব একটি মানবিক উদ্যোগ দেখিয়ে তাদের প্রায় সবাইকেই নিজের দেশে আশ্রয় দিয়েছে। এর জন্যে তাঁদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। পৃথিবীব্যাপি যখন আমাদের চোখে 'সভ্য' ও 'উন্নত' দেশগুলি শরণার্থীদের নিজের দেশে ঢুকতে না দিয়ে পানিতে ডুবতে দিয়ে বা না খেয়ে মরে যেতে দিচ্ছে সেখানে আমাদের মত জনবহুল ও তাঁদের তুলনায় দরিদ্র্য দেশের এটা অবশ্যই এক বিরাট উদারতা ও মানবিকতা বটে।
এখন সব কিছুর শেষে বাস্তবতা দাঁড়িয়েছে দশ লাখের ওপর রোহিঙ্গা শরনার্থী গত ২০১৬ থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা কবে ফেরত যাবে বা আদৌ যাবে কি না সেটা এখন একটা বিরাট খাঁড়ার মত প্রশ্ন হয়ে সবার মাথার ওপর ঝুলছে, এই মূহুর্তে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা নিয়ে ঘটনার মুল মাফিয়া ডন চীনের সাথে কথা বলতে গেছেন। আমরা অতটা আশাবাদি নই, তারপরেও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করা ছাড়া আর কী-ই বা করার আছে আমাদের?
রোহিঙ্গারা যদি এখানে বেশ কিছুদিন থেকে যায় তবে সবথেকে বড় একটা সংকট হবে এদের পরের প্রজন্ম। মানে যারা এখন একেবার ছোট, বা এখানে জন্ম নিল। কার্যত তাদের কোন দেশ নেই, আইন নেই, প্রতিষ্ঠান নেই। এরা বড় হবে এক জিঘাংসা নিয়ে, এবং 'ভাল' মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার তাদের খুব একটা দায় থাকবে না। এরা অপরাধে জড়িয়ে গেলে তখন সেটা বাংলাদেশের জন্যে এক অসহনীয় সমস্যা হয়ে দেখা দেবে। তো এই ব্যাপারটা যাতে না ঘটে সেজন্যে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক এনজিও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে সরকারের পাশাপাশি, যেমন তাদের একটা ভাল স্কুলভিত্তিক পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেবার কাজ করছে ইউনিসেফ (বৃটিশ কাউন্সিলের সাথে মিলে আমরা সেইসব বইয়ের ডিজাইন ও আঁকাআঁকি করছি এই মূহুর্তে)। এদের একটা স্ট্যান্ডার্ড পড়াশোনার ব্যবস্থা করা গেলে ভবিষ্যৎ সমস্যার কিছুটা হলেও কমবে এই হল এখন একমাত্র আশা।
সম্প্রতি এরকমই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আহবানে (মুলত আমার নিউ এইজের এক্স কলিগ সাদ হাম্মাদি ভাইয়ের আমন্ত্রণে) আমরা ৭ জন কার্টুনিস্ট একটা দারুণ প্রজেক্টে ঘুরে এলাম রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেটা হল বাচ্চাদেরকে কার্টুন আঁকা শেখানো ও তারপরে তারা জীবনে কে কী হতে চায় সেটা আঁকতে বলা। বাচ্চারা দূর্দান্ত এঁকেছে। আমাদের চিন্তার বাইরে সুন্দর তাদের আঁকা। এবং আমরা মুখে, রোহিঙ্গা, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান যে নামেই ডাকি না কেন, বাচ্চাদের একমাত্র পরিচয় হল তারা বাচ্চা। তারা সব এক, আলাদা করি আমরা বড়রা।
যাই হোক, দূর্ভাগ্যবশত; কক্সবাজার নেমেই আমি নিজে ভাইরাল জ্বরে কাবু হয়ে তিনদিন হোটেলেই পড়ে ছিলাম, অন্যরা সবাই ক্যাম্প ঘুর এসেছে, তাই ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা আমি এখানে বলতে পারছি না। যাই হোক, আমরা বরং তাদের কিছু আঁকা দেখি। তাদের আঁকা প্রদর্শিত হয়েছিল ২০-২৫ জুন, ২০১৯ ঢাকার, EMK সেন্টারে। সব কাজ নিয়ে একটা বইও বের হচ্ছে আজ। যথাসময়ে সেটাও শেয়ার করার চেষ্টা করব।
শিক্ষক হয়ে ইংরেজী শিখাইতে চাই |
ইনি সম্ভবত তাকেই কপি করেছে |
EMK সেন্টারে প্রদর্শনী |
EMK সেন্টারে প্রদর্শনীঃ মোট ১৫৬ টি ছবি ছিলো গ্যালারি জুড়ে |
ক্যাম্পে আঁকছেন মামুন ভাই |
মৌলবী হইতে ইচ্ছুক |
কার্টুনিস্ট মাহাতাব ও রোহিঙ্গা শিশু
|
Subscribe to:
Posts (Atom)
হ্যাংওভার কাটিয়ে
একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...
-
আইডিয়া পাওয়া বা ক্রিয়েটিভ কাজ ইত্যাদিকে এখনো আমাদের সমাজে একটা অলৌকিক প্রতিভা হিসেবে ভাবা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সত্যও বটে। ত...
-
দীর্ঘ দশ মাস পর ২০১৮ সালের বিজ্ঞান বিভাগের নবম-দশম শ্রেণির ৫ টা (গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান) ও আর্টস ও কমার্স বি...
-
এইবার আমরা হুইলের আসল কাজটা দেখি। মানে রঙ করার সময় এটা আসলে কি কাজে লাগে। একটা ছবি রঙ করার সময় আসলে মূল যে ব্যপারটা মাথায় আগে আনতে হবে সেটা ...