অনেকদিন পর লিখতে বসেছি। পর পর এত কিছুর মধ্যে দিয়ে গত কয়েকমাস যেতে হয়েছে যে লিখতে বসার মুডটা সেভাবে আসছিলোই না। আর যতই দিন যাচ্ছিল ততই লেখার বিষয়বস্তুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছিলো, ফলে লিখতে বসার আগে আবার আলসেমি পাচ্ছিলো বারবার। যা যা করা হল এরই ফাঁকে ফাঁকে তার অতি সংক্ষিপ্ত একটা যাকে বলে-'ইন আ নাটশেল' মানে বাদামের খোসায় পুরে বলতে গেলে তা দাঁড়াবে অনেকটা এমন-
১. ছোটকাকু সিরিজের দুইটি কমিক্স
কন্ট্রাকচুয়াল কাজ। বেশ সময়সাপেক্ষ ড্রয়িং, রঙ করতে সাহায্য করেছে কার্টুনিস্ট রোমেল বড়ুয়া। সারা বছর টেক্সট বইয়ের কাজের ফাঁকে এই বই দুটো সমান্তরালে চলেছে। বইমেলায় কমিক্স দুটি প্রকাশ করেছে SRK শোটাইমস। পাওয়া যাচ্ছে সপ্তডিঙ্গা স্টলে, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের শিশু চত্বরে।
২. হুমায়ূন আহমেদের গল্পে ছোটদের কমিক্স
অনেক দিন আগের পরিকল্পনা, এবারে করা হল। ভূমিকা লিখে দিয়েছেন আহসান হাবীব। সংকলনে কার্টুনিস্ট জুনায়েদ আজীমের একটা কমিক্সও থাকার কথা ছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক'দিন আগেই জুনায়েদের ছোট ভাই সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়। তাই এর মধ্যে তাকে আর জ্বালাইনি। সংকলনে হুমায়ূন আহমেদের অসাধারণ চারটা গল্পের কমিক্স এসেছে-
১. নীল হাতী
২. কানী ডাইনী
৩. চেরাগের দৈত্য
৪. ভূত মন্ত্র
এটা বের হয়েছে আমাদের ঢাকা কমিক্স থেকে। (কেনার লিংক)
৩. নবীন সিরিজ 'জুম' (প্রচ্ছদ)
ঢাকা কমিক্স থেকে একেবারে নতুন কমিক্স আঁকিয়েদের জন্যে আমরা একটা নতুন সিরিজ চালু করেছি গত বছর থেকে। 'নবীন সিরিজ' নামে। তার ধারাবাহিকতায় এবারে এলো 'জুম', সব্যসাচী পোলোর আঁকা। রাঙ্গামাটির প্রেক্ষাপটে বলা এক লোকাল সুপারহিরোর গল্প। ব্যাক্তিগতভাবে আমি সুপারহিরদের স্টিরিওটাইপের ঘোর বিরোধী কিন্তু নতুনদের মৌলিক ঘরানায় বলার চাষ্টা করাটাকে উৎসাহ দিলে শেষ পর্যন্ত আরো ভালো কিছুই আসবে বলে বিশ্বাস করতে চাচ্ছি। এর আগের বের হওয়া ইব্রাহীম গল্পটাও আমার নিজের বেশ ভালো লেগেছে। এটার প্রচ্ছদে লেটারিংটা করে দিয়েছে কার্টুনিস্ট মাহাতাব।
৪. পিশাচ কাহিনি ১ (প্রচ্ছদ ও গল্প)
আমার অনেক আগের পছন্দের একটা গল্প। শেষমেশ ঝাঁড়পোঁছ করে এবারে বের হল। এঁকেছে এড্রিয়ান অনীক। ওর ড্রয়িংটার সাথে হররটা 'যায়'। প্রচ্ছদ আমার।
৫. স্যালামান্ডার জিন (প্রচ্ছদ)
এ সময়ের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল লেখক, আমার নিজেরও পছন্দের মাশুদুল হক নিজেই এই নতুন বইটার জন্যে নক করলো। স্টোরি প্লট বেশ দারুন। তাঁর ডঃ কিজিল সিরিজের সম্ভবত দ্বিতীয় বই।
৬. বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স (প্রচ্ছদ)
এবং শেষে মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের বই। স্যার ফোন করে বলে দিলেন কিভাবে কী হতে পারে। সেইটাকে মূল ধারনায় রেখে ফটো দিয়েই করা বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যপিয়েন্স। বের হবার পরে স্টলে বসে আছি, হঠাত দেখি বিরাট এক জটলা আমাদের স্টলের দিকে আসছে। আমরা এত জনপ্রিয় হয়ে গেছি ভেবে অবাক হলেও একটু পরেই দেখি স্যার আর ম্যাডাম আমাদের দিকে আসছেন, পিছনে এক দঙ্গল ভক্ত। তাঁরা এই বইটি ও সাথে স্যারের এবারে অন্যতম সায়েন্স ফিকশন 'ত্রাতিনা' নিয়ে আমাদের স্টলে আসছেন! ত্রাতিনা বইটি নিয়ে একটা কথা শেয়ার করার লোভ সামলানো যাচ্ছে না, সেটা হল, এই বইটি স্যার এবারে আমাদের দুইজনকে, মানে মিতু আর আমাকে উৎসর্গ করেছেন। যা লিখেছেন তা জানাতে অস্বস্তি লাগলেও এখানে তুলে দিচ্ছি।-
৭. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : দুইশত গ্রন্থ তালিকা (প্রচ্ছদ)
তাম্রলিপির রনি ভাইয়ের অনুরোধের প্রচ্ছদ। জাফর স্যারের এই মেলায় ওই বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স বইটি নাকি ২০০ তম বই হয়ে বের হয়েছে। সুতরাং তাঁর সব বইয়ের একটা মেগা তালিকা না করলেই না। আর সেটার একটা কিঞ্চিত রিয়েলিস্টিক প্রচ্ছদও তাই চাই।
৮. হালদা (উন্মাদ ফিচার)
বইমেলার তালিকায় উন্মাদের পরের মাসের ফিচার আসবে কি না জানি না। কিন্তু করছি ফেব্রুয়ারিতেই, তাই দিয়ে দিলাম, তৌআহমেদের নতুন সিনেমা -হালদা।
৮. উন্মাদ বইমেলা ভলিউম প্রচ্ছদ
আর উন্মাদের ভলিউমের প্রচ্ছদ, যা না দিলেই নয় এঈ পোস্টে।
মোটামুটি এই ছিল এবারে আমার কাজ। আরেকটা যেটা করে রেখেছিলাম বেশ আগেই সেটা আর ্ইযাঁ মেলায় আনতে পারিনি, আসবে মার্চ মাসে, সেটা হল রুহান রুহান গ্রাফিক নভেলের ৪ নম্বর সংক্যা। শুধু ড্রাফট প্রচ্ছদটা দিয়ে রাখি আপাতত।
সব মিলে একটা খরার বছর গেল। ২০১৮ তে অনেক কাজ করার ইচ্ছা রাখি।