August 30, 2024

36th July movement Cartoons

সাধারণত আমার ব্লগে আমি আমার রাজনৈতিক কার্টুন নিয়ে লিখি না। ব্যস্ততার কারণে ব্লগ লেখাও কমে গেছে। তবে এই ঘটনাটা নিয়ে বিশদ লিখতে গিয়ে ব্লগই বেছে নিচ্ছি আবার। 

অবিশ্বাস্য এক ছাত্র-জনতা বিপ্লবের সাক্ষী হলাম গত ক'দিনে। সাধারণ এক চাকরির কোটা পদ্ধতি সংস্কার নিয়ে শুরু হওয়া একটা মুভমেন্ট ১৫ বছরের  আওয়ামী শাসন কে সমূলে উৎপাটিত করে দিল এক মাসেরও কম সময়ে। সেটার কারণ, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, আফটার ইফেক্টস এসব নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে অচিরেই। আপাতত ওই সময়ে করা আমার কিছু পলিটিক্যাল কার্টুন আপ করে রাখছি এখানেই। ক্যাপশনে বর্ণনা। 

প্রথমেই ২০১৮ র তিনটি কার্টুন এখানে রাখা উচিত বলে মনে করি। এগুলো সবই তখনকার কোটা সংস্কার নিয়ে করা কাজ। 


কোটা পদ্ধতি থাকবেই, পিছিয়ে পড়া বা বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা অপরিহার্য, তবে সেটার মাত্রা সময়ের সাথে যৌক্তিকভাবে সমন্বয় জরুরি। সত্যি বলতে আমি এখনও মনে করি কোটা সংস্কার আন্দোলন জাতীয় আন্দোলন নয়। শুধু সরকারি চাকরিপ্রত্যাশী একটি গোষ্ঠীর ব্যক্তিগত আন্দোলন। তবে ইতিহাসের আশ্চর্য একটা ঘটনা ঘটে গেল যে এমন একটা বিশেষ দাবিকে অন্যায়ভাবে দমন করতে গিয়ে কীভাবে ১৫ বছরের এক গেড়ে বসা সরকারকে উৎখাত করে দিলো। সমাজবিজ্ঞানীরা নিশ্চই এখানে গবেষণার দারুণ কিছু রসদ পাবেন


২০১৮, তখনকার মতন কোটা আন্দোলন থামিয়ে দেয়া হল।
এই কাজটি ৬ বছর পর এসে একটা ভিন্ন মাত্রা পেল। 


একই ধরনের কার্টুন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়েও করেছিলাম। বাচ্চাদের একটা ন্যায্য আন্দোলন নিষ্ঠুর হাতে দমন করা হয়েছিল সেবারও। বাসমালিক সমিতির দুর্বৃত্তায়নের ফলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে সেই আন্দোলনেও সাড়া ছিল অভূতপূর্ব। সেটাও ছাত্রলীগ- মতান্তরে হেলমেট লীগ ও পুলিশ দিয়ে নির্মমভাবে দমন করা হল। আমি নিজে সেবারে রাস্তায় নেমে স্বচক্ষে দেখেছি হেলমেট পরা ছাত্রলীগ ও পুলিশ একত্রে মিলে এলিফ্যন্ট রোডের মোড়ে শিক্ষার্থীদের পিটাচ্ছে। এবং সেদিন ই আমি জেনে যাই এই সরকারের পতন আসন্ন, ও সেটা এই বাচ্চাদের ই হাতে।



ছাত্রদের বিক্ষোভ দমনে 'ছাত্রলীগ ই যথেষ্ট' বলে ওবায়দুল কাদেরের ঘোষণা ও ছাত্রলীগ+পুলিশ মিলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলায় ১০+ শিক্ষার্থী নিহত। এই কার্টুনটি ঘটনার দিন (১৬ জুলাই, ২০২৪) এ ফেইসবুক এ আমার পেইজে আপলোড করি। এবং এটা সম্ভবত আমার অন্যতম কাজ যা দশ হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছে ও কয়েক লক্ষ মানুষ দেখে রিয়্যাক্ট করেছে। মনে রাখা ভালো যে এই ধরনের কাজ আমি টানা এঁকে গেলেও শুধু ভয় থেকেই মানুষ শেয়ার ও করতেন না বহুদিন। আমাকে পারসোনালি জানাতেন যে ভাল হয়েছে। এই কাজের এত ছড়ানো প্রমাণ করে কত মানুষ কি ভয়ানক ক্ষিপ্ত ছিল সরকারের সিদ্ধান্তে। তারা আর ডিজিটাল আইনের তোয়াক্কা করছিলো না।


আমার ক্যাম্পাসে রক্ত কেন- এই প্রশ্ন করায় আয়মান সাদিকের প্রতিষ্ঠান টেন মিনিটস স্কুলের ৫ কোটি টাকার অনুদান বাতিল করে দেয় আইসিটি মিনিস্ট্রি, যেটা আবার সাথে সাথে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেন। সাংবাদিকদের জানান- দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য। সারাজীবন আওয়ামী সরকারের বশংবদ ও ফান্ড প্রত্যাশী হলেও আসলে যে শেষমেশ দুই নৌকা একসাথে হয় না, তাই নিয়ে ক্যুইক কার্টুন ছিল এটা। এদিন হঠাৎ কার্ফিউ ও আন্দোলন জোরদার হয়, আর ওদিকে আমার ৫ মাসের মেয়ে অনুকে নিয়ে মিতু ছিল ইউনিসেফ এ। আমি জলদি বিকেলে একটা সিএনজি নিয়ে ওদের নিয়ে আসি। পুরো সময়টা আতঙ্কে ছিলাম, এই বুঝি কোথাও হামলার মধ্যে পড়লাম, আক্ষরিক অর্থে তখন শহরে চলছে গোলাগুলি! এবং এই দিনেই রংপুর এ প্রকাশ্যে নিরস্ত্র আবু সাঈদকে উপর্যুপরি গুলি করে মারা হয়। এটা জানতে পারি রাতে, দু হাত ছড়িয়ে দাঁড়ানো এক যুবককে একের পর এক গুলি করে যাচ্ছে পুলিশ আর একসময় সে লুটিয়ে পড়লো মাটিতে। এই দৃশ্যটাই পুরো আন্দোলনে গণমানুষকে যুক্ত করে দেয়। আর মানুষ ও এর পর থেকে আর যেন গুলিকে ভয় পাচ্ছিলো না।


ছাত্রলীগ আনলিশড- নিউ এইজে এর পরদিন (১৭ জুলাই, ২০২৪) প্রকাশিত

২৫ জুলাই, অলরেডি কারফিউ জারি করেছে সরকার। ওবায়দুল কাদের বলেছে- 'শ্যুট এট সাইট' বলা আছে। এর মধ্যে ইন্টারনেট শাটডাউন করেছে আইসিটি মিনিস্ট্রি। যদিও জনগণকে বোকা বোঝাচ্ছে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ হোসেন পলক যে ইন্টারনেট নাকি 'দুষ্কৃতিকারীদের' নাশকতার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। কথা সত্য, দুষ্কৃতকারী তো বটেই। 

এই কাজটা যেদিন করি সেদিন রাস্তায় আর্মি নেমে গেছে, ট্যাংক ঘুরছে আমাদের বাসার আশেপাশে। অদ্ভুত একটা পরিস্থিতি। যেতে যেতেই মনে হল হত্যাকাণ্ডে আর দমনে এই সরকার এরশাদকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এবং ৯০ দশকের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনকারীরা হয়ত বলতে বাধ্য হবে যে এরশাদ এর চেয়ে ভালো ছিল। সেই থেকেই এই কাজ। নিউ এইজ এ এই কাজ বের হওয়ার পরদিন সম্পাদক নুরুল কবীর ডেকে বললেন, এটার বিরাট রিঅ্যাকশন পেয়েছেন তিনি সরকারদলীয় সাংবাদিকদের থেকে। এটা আমাদের বাড়াবাড়ি হচ্ছে বলে অনেকে সতর্ক করেছেন। তবে আজকে এসে বুঝতে পারছি বাড়াবাড়িটা আমরা করিনি। গতকাল জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী জুলাই গণহত্যায় নিহতের সংখ্যা ৬৫০! আর আমাদের গণমাধ্যমে সোর্স সহ তালিকাই এখনো ২৫০ এর কাছাকাছি। সুতরাং এই কার্টুন টা বরং কম ই হয়েছিলো। নিউ এইজ লিংক।


৩০ জুলাই, এটাও ফেইসবুক এ আমার পেইজে দেয়া। তখন ভয়ানক গোলাগুলি চলমান। হেলিকপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও মতান্তরে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে, আমি অনুকে নিয়ে ছাদে উঠে দেখি র‍্যাবের হেলিকপ্টার বিপজ্জনক উচ্চতায় উড়ছে, বন্দুক তাক করে র‍্যাবের লোকজন বসা। অলরেডি বেশি কিছু শিশু বাড়িতে থেকেও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে মনে পড়ায় সাথে সাথে নেমে আসি। নিজের দেশের সরকার যখন গণহত্যায় নামে তখন তার চেয়ে অসহায় আর কিছু হতে পারে না। মৃত্যুর সংখ্যা তখন কাগজে কলমে যতদূর মনে পরে অলরেডি ১০০ ছাড়িয়েছে।

আগস্ট ১ এ নিউ এইজের জন্যে আঁকা তবে অপ্রকাশিত। রংপুরে পুলিশ প্রকাশ্যে গুলি করে মারে আন্দোলনকারী আবু সাঈদকে। তার ভিডিও ছড়িয়ে পরে গোটা বাংলাদেশে। এর পরেই এফআইআর- এজাহারে তারা লেখে আন্দোলনকারীদের ছোঁড়া ইটপাটকেল এ মারা গেছে সে। এমনকি তার হত্যাকারী হিসেবে এক কিশোর ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কি যে অবিশ্বাস্য অত্যাচার ও অন্যায় সবার চোখের সামনে ঘটেছে তা এখনো ভাবলে শিউরে উঠতে হয়। এর মাঝে যাতে কেউ কিছু জানতে না পারে তার জন্যে মাঝে মাঝেই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, পুরোটা সময় ই প্রায় বন্ধ/ ডাউন করে দেয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। আমাদের ন্যূনতম ইন্টারনেট এর মধ্যে যোগাযোগ বা তথ্য আদানপ্রদান করতে হয়েছে VPN সার্ভিস ব্যবহার করে। রীতিমত যুদ্ধ পরিস্থিতি।

এই কাজটি জুলাইয়ের মাঝামাঝি ড্রাফট করে রাখা ছিল নিউ এইজের জন্যে, তবে পরে আর পাবলিশড হয়নি। এর পরে ২ আগস্ট ফেইসবুক এ আমার পেইজ এ দিয়ে দেই।



আগস্ট ৩, এ সময়ে এসে আসলে সবার অবস্থা হয়ে গিয়েছিল যা হয় হোক। মরে গেলেও আমরা আন্দোলন থামাচ্ছি না। আর একত্রে যেই তরুণেরা কখনোই রাজনীতি নিয়ে তেমন একটা ভাবে নি, বা আঁকেনি তারাও সবেগে এঁকে যাচ্ছিলো। সেদিন এই কাজটি আপ করা।


আগস্ট ৫, ঐতিহাসিক দিন। সকাল থেকেই থমথমে সব। নিউজ চ্যানেলও একই খবর লুপে ফেলে রিপিট করছে। বাইরে কার্ফিউ, ছাত্রলীগ নেতারা রক্তের হোলি খেলার ঘোষণা দিয়েছে। শ্যুট এট সাইট বিদ্যমান। হঠাৎ আমার বন্ধুদের ফোন উত্তরা থেকে। তারা সবাই রাস্তায় নামছে কার্ফিউ অমান্য করে। এই আন্দোলনের মূল যে স্পিরিট সেটা এসেছে এরকম গণমানুষ থেকে। কারণ আমার বন্ধুরা কার্ফিউ অমান্য করে রাস্তায় নামার মানুষ না। কোনভাবেই যার আন্দোলনে নামার কথা না সে-ও এই ভয়ানক সিরিজ হত্যাকাণ্ড দেখে রাস্তায় নেমে গেছে। টিভিতে ওদিকে দেখা যাচ্ছে বেলা দুইটায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। তখনই বুঝে ফেললাম শেখ হাসিনা আর নেই। খুব সম্ভব এই মুহুর্তে সে পালাচ্ছে। তখন তখন ই এই কার্টুন টি আঁকি। এবং বিকেল নাগাদ সে কথাই সত্য হয় (যা অবিশ্বাস্য), শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। 




৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর পর নৈরাজ্যের চুড়ান্তে চলে যায় দেশ, ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয় যা এমনকি ১৯৭১ এও অক্ষত ছিল! সরকারী স্থাপনা ভাংচুর, আর সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার তো আছেই। আন্দোলনকারীদের যেন এসব ব্যাপারে একটা ডিনায়াল স্টেজ শুরু হয়েছে। যেন দেখেও দেখছে না, বা দেখলেও এগুলি তাঁদের কাছে প্রাথমিক ভাবে জাস্টিফাইড। অনেকেই বলছে এসব একটু আধটু হয়ই। ঠিক যখন আপনি কোন একটা নীতির প্রশ্নে দ্বিচারী হবেন, তখন ই আসলে আপনার নিজের কবর খোঁড়াটা শুরু হবে। মাথায় রাখা উচিত লড়াই কখনো কোন দল বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে না, লড়াইটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সেটা যে-ই করুক। যদিও অন্যায়ের সংজ্ঞা অনেকের ক্ষেত্রেই আপেক্ষিক, এতে অনেক গুলি ভ্যারিয়েবল থাকে। সেসব নিয়েও আলাপ চালাতে হবে।


৬ আগস্ট, নিউ এইজের কার্টুন,
য পলায়তি, স জীবতি। সব নেতা কর্মিদের ফেলে সপরিবারে পলায়ন।


ড. ইউনুসের প্রধান উপদেষ্টা পদ গ্রহণ।


স্বৈরাচারী হাসিনাকে উৎখাতের পরে যথেচ্ছ ভাংচুর ও নজীরবিহীন নৈরাজ্য ঘটতে দিয়ে 'ছাত্র-জনতা' নিজেই ধীরে ধীরে সেই বেদীতে আসীন হচ্ছে। অনেকেই এই কাজের পরে ভ্রু কুঁচকে ফেললেন দেখে কৌতুক বোধ করলাম। নিজের সমালোচনা না নিতে  নিতে হাসিন সরকারের পতন। আর সেই একই জিনিস মাস না ঘুরতেই চর্চা শুরু করে দিলো 'ছাত্র-জনতা' প্রেমী জনতার একাংশ।




প্রথম আলোর কথাস-COM জুলাই বিপ্লবের পরে হুট করে হল কথা ক' - 'ম' টা কেটে দেয়া। আইডিয়াটা ভালো, এটা আবার এই আন্দোলনের জন্যে গাওয়া র‍্যাপ গান 'কথা ক' এর সাথে মিলিয়ে করা। এর সাথে মিলিয়ে আমার কাজ, নিজের সাইন এর স্মাইলি হেড টা বের হয়ে এসেছে একটা বদ্ধ কামরা থেকে।


এই কাজটা এই পোস্ট এ না রাখলে অন্যায় হবে। গত দীর্ঘ পনের বছর আমি অপেক্ষা করছিলাম একটা ভিন্ন দিক থেকে কার্টুন আঁকার। নইলে নতুন প্রজন্মের কাছে আমি শুধুমাত্র আওয়ামী বিরোধী কার্টুনিস্টে পরিণত হচ্ছিলাম। প্রথম সুযোগেই তাই পুরো বিল্পবের পরে হঠাৎ টিভি থেকে তারেক জিয়া স্বয়ং এবারে  দৃশ্যপটে বেরিয়ে আসছেন এমন আঁকি, এটা জাপানি হরর সিনেমা দ্যা রিং একটা বিখ্যাত হরর দৃশ্য। টিভিতে চলমান একটা ভিডিও থেকে একটা মেয়ে সত্যি সত্যি বের হয়ে আসে ঘরে। একটা লক্ষ্য ছিল এতদিন আমাকে নিজেদের লোক ভাবা বি এন পি গোষ্ঠীর একটা বড় অংশ যেন আমার সঙ্গ ত্যাগ করে, বা সোশ্যাল মিডিয়ার ভাষায় 'আনফলো' করে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস। এই কার্টুন  শেয়ার করে দেন তারেক জিয়া স্বয়ং। এবং তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী এই ধরনের কার্টুন যে আবার ফেরত আসছে এটাকে তিনি স্বাগত জানান, ও যাতে এরকম আরো আঁকা হয়। স্মার্ট মুভ!- এ ছাড়া আর কছুই বলার নেই। আমার পেইজ এ এখন হুহু করে বেড়ে গেল বিএনপি সমর্থক ও  তাঁদের নেতাকর্মীতে। ব্যাপারটায় অস্বস্তি ও কৌতুক মিলে একটা মিশ্র অনুভূতি হয়েছে। এই নিয়ে হয়েছে অসংখ্য নিউজ, তার কিছু লিংক এখানে দিয়ে দেই- 
ইত্তেফাক
গুগল করে দেখলাম যে পরিমাণ খবরের পোর্টালে এই খবর এসেছে  তা সব এখানে পোস্ট করতে করতে বেলা পার হয়ে যাবে। সেই চেষ্টা বাদ দেই, এক কথায় এটা তার পরদিন অনেকটা টক অফ দ্য টাউন হয়ে গেছিলো। তরুণ জেনারেশনের মন বুঝে এই কাউন্টার প্রোমোশন আমাকে কিছুটা হতবুদ্ধি করে দিয়েছে সন্দেহ নেই, তবে এই ট্যুইস্ট মেবি কার্টুন আঁকলে হুট করে কেউ ধরে নিয়ে যেতে পারে এমনটা ভাবার চাইতে বেটার। কারণ সিরিয়াস স্যাটায়ার পলিটিকাল কার্টুন যারা করেন ও প্রাচার করেন আমার জানামতে তার মধ্যে একমাত্র আমি-ই বাংলাদেশে থাকি। অপরদিকের অকুতোভয় বিপ্লবী শিল্পীদের অধিকাংশই প্রবাসী।
 


অন্য যে কাজটি দিয়ে আমি এই লেখাটা শেষ করতে চাই তা হল 'বিপ্লব'  পরবর্তী সময়ের সুযোগে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে দল হিসেবে গণহত্যার পক্ষে থাকা ও কোলাবোরেটর হিসেবে কাজ করা জামায়াতে ইসলামী নিয়ে 29.8.24 এ নিউ এইজ এ করা এই কাজটা। 'ছাত্র-জনতা' বিপ্লবের পর পর তুলনামূলকভাবে ১৯৭১ এর সাথে একেবারেই কম পরিচিত প্রজন্মের কাছে একটা সফেদ ইমেজ দাঁড়া করাতে তারা দৃশ্যপটে হঠাত আবির্ভূত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে  বা এমনিতে গত পনেরো (ইন ফ্যাক্ট ২২ ) বছরে কার্টুন এঁকে যতটা গালাগালী বা হুমকি না পেয়েছি, এই একটা কাজ এ তার থেকে তা বেশি পেয়েছি। নোংরা গালাগাল ও প্রকাশ্যে হুমকী। আমি বলবো এটা প্রমাণ করে কাজটা কতটা সফল। কারণ সফেদ বেশ ধরার চেষ্টারত দলের সমর্থকরা আসলে কী ভাষা ধারন করে এটা সামনে আসা জরুরী। এবং আমি মনে করি এ ক'দিন আওয়ামী লীগের কুক্ষিগত মুক্তিযুদ্ধের যে একপেশে ভাষ্য সেটার অন্যপাশ নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে। এদ্দিন ১৯৭১ কে তারা যেভাবে দলীয়করণ করে রেখেছিল তাতে যে যা-ই বলতো তাকে একটা ট্যাগ স্থাপন করা হত। আমি মনে করি এখন সময় এসেছে মুক্তিযুদ্ধের না বলা অংশ নিয়ে কাজ করার। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে  তাজউদ্দীন উপেক্ষিত থেকে গেছেন। উপেক্ষিত থেকে গেছেন বাম রাজনীতির প্রেক্ষাপট থেকে আসা যোদ্ধারা, উপেক্ষিত থেকে গেছেন অনেক সাধারণ মানুষ। এসব নিয়ে কাজ শুরু করার দারুণ সময় এটা। 



হ্যাংওভার কাটিয়ে

একটা সময় ছিল সব জায়গায় লেখা থাকতো (অবশ্যই এখনো আছে) 'রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ'। এখন অবস্থা উলটো। এখন যেন রাজনীতি ছাড়া অন্য আলাপ জমেই না। ...